আসানসোলে পৌঁছল হাওড়া-নয়াদিল্লি রাজধানী। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
শিয়ালদহ-নয়াদিল্লি রাজধানী পরে এ বার হাওড়া রাজধানীর স্টপেজ শুরু হল আসানসোল স্টেশনে। সোমবার সন্ধ্যায় সবুজ পতাকা দেখিয়ে তার সূচনা করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। ছিলেন শহরের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারিও। শিল্পাঞ্চলের ব্যবসায়ীদের মতে, এর ফলে এলাকার অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে।
গত লোকসভা ভোটে জেতার পরে আসানসোলের সাংসদ বাবুলের কাছে হাওড়া-নয়াদিল্লি রাজধানীর আসানসোলে স্টপেজ দেওয়ার আর্জি জানায় শিল্পাঞ্চলের একাধিক বণিক সংগঠন। আসানসোলের ডিআরএমের কাছেও লিখিত আবেদন জানানো হয়। সম্প্রতি বাবুল জানান, রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল তাঁকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, হাওড়া-নয়াদিল্লি রাজধানী এ বার থেকে আসানসোলে দাঁড়াবে। হাওড়া থেকে ছেড়ে সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ও নয়াদিল্লি থেকে হাওড়া ফেরার সময়ে সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ ট্রেনটি আসানসোল স্টেশনে দাঁড়াবে বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।
এ দিন এই উপলক্ষে রেলের তরফে বিকেল ৫টা নাগাদ স্টেশন চত্বরে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয় মেয়র জিতেন্দ্রবাবুকে। তৃণমূল এবং বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকেরাও হাজির হন। বাবুল শুরুতে বক্তব্য রাখার জন্য উঠতেই কিছু তৃণমূল সমর্থক চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন বলে অভিযোগ। এর পরেই বাবুল জিতেন্দ্রকে আগে বক্তব্য রাখার জন্য অনুরোধ করেন। নিজে বক্তৃতা করেন পরে। সন্ধ্যা ৭টার পরে ট্রেন আসানসোল স্টেশনে পৌঁছয়। বাবুলের হাতে সবুজ পতাকা তুলে দেন রেল আধিকারিকেরা। বাবুল ডেকে নেন মেয়রকেও। দু’জনেই পতাকা উড়িয়ে ট্রেনের যাত্রা শুরু করেন। ওই ট্রেনেই বাবুল দিল্লি রওনা হন।
অনুষ্ঠানে চেঁচামেচি প্রসঙ্গে বাবুলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এই রকম আচরণ পাওয়া আমার অভ্যাস হয়ে উঠেছে। কিন্তু আমরা অসৌজন্য করিনি। এক সঙ্গেই এই ইতিহাসের সাক্ষী থেকেছি।’’ অনুষ্ঠানের পরে জিতেন্দ্র অবশ্য বলেন, ‘‘এই স্টপেজ দেওয়ার পরিকল্পনা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনেক দিনের। বাবুল নতুন কিছু করেননি।’’ অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে তিনি দাবি করেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে বারবার ছোট করা হচ্ছে। তাই সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিপ্রকাশ হয়েছে।’’
রাজধানীর এই নতুন যাত্রায় খুশি এলাকার ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানান, ব্যবসার কাজে নিয়মিত দিল্লি যাতায়াত করতে হয় অনেককেই। তাতে সুবিধা হবে। ‘ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’-এর কার্যকরী সভাপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান বলেন, ‘‘শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে দিল্লির যোগাযোগ আরও সহজ হল। পণ্য পরিবহণ-সহ নানা কাজে সুবিধা হবে। এলাকার অর্থনীতির পক্ষে তা ভাল।’’ আসানসোল চেম্বার অব কমার্সের উপদেষ্টা সুব্রত দত্ত জানান, সম্প্রতি অণ্ডাল থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান চালু হয়েছে। সেই সঙ্গে আরও একটি রাজধানীর স্টপেজ পাওয়ায় শুধু আসানসোল শহর নয়, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, বার্নপুরের ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হবেন।