দাঁইহাট পৌরসভা। —ফাইল চিত্র।
পুরপ্রধানের অপসারণ চেয়ে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী এবং দলীয় নেতৃত্বকে চিঠি পাঠিয়েছেন দাঁইহাটের পুর প্রতিনিধিদের একাংশ, দাবি তৃণমূল সূত্রের। এক সপ্তাহের মধ্যে বৃহস্পতিবার ফের বোর্ড অব কাউন্সিলরের সভা (বিওসি) ফের বয়কট করলেন ১১ জন পুর প্রতিনিধি।
তৃণমূল সূত্রের খবর, ১৩ জুন পুর প্রতিনিধিদের একাংশ দলেরই পুরপ্রধান প্রদীপ রায়ের অপসারণের দাবিতে রাজ্যের ফিরহাদ হাকিমকে কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। সেই চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে দলের রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বের কাছে। চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, পুরপ্রধানের ‘অপদার্থতার’ জন্য শহরের নাগরিক পরিষেবা লাটে উঠেছে। মানুষের আস্থা ফিরে পেতে হলে অবিলম্বে পুরপ্রধানকে অপসারণ করতে হবে বলে দাবি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার কোরাম না হওয়া সত্ত্বেও পুর আইন মোতাবেক বিওসি-র বৈঠকে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান পুরপ্রধান।
এ বার লোকসভা ভোটে দাঁইহাট শহরে আড়াই হাজার ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। ১৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৯টিতে তৃণমূল পিছিয়ে। ১৩ জুন পুরপ্রধান বোর্ড বৈঠক ডাকেন। বিওসির আমন্ত্রণপত্রে সই করলেও মিটিংয়ে না যাওয়ায় কোরাম হয়নি। ওই দিনই পুরপ্রধানের অপসারণের দাবি ওঠে। এ দিন ফের বিওসি-র সভা ডেকে পুর প্রতিনিধিদের বাড়ি বাড়ি চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু পুরসভা সূত্রের খবর, কেউ তাতে সই করেননি। পুরপ্রধান নির্ধারিত সময়ে সভায় আসেন। সঙ্গে ছিলেন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি সমর সাহা ও ১৪ নম্বরের পুরপ্রতিনিধি অমরেন্দ্রনাথ দাস। বেশ কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করে দুই পুর প্রতিনিধি ও পুরসভার এক আধিকারিককে নিয়ে সভা শুরু হয়। কিছু সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।
উপ-পুরপ্রধান অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “পুরপ্রধানের অযোগ্যতার জন্য শহরে উন্নয়ন থমকে গিয়েছে। ভোটে পিছিয়ে গিয়েছি। সেই কারণে তাঁর অপসারনের দাবিতে চিঠি দিয়েছি।’’ ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি অসীম ঘোষের দাবি, ‘‘আমরা ১১ জন পুরপ্রতিনিধি বিওসি-র মিটিং বয়কট করে আগেই দলকে বার্তা দিয়েছি। এ দিন কোরাম না করে অবৈধ ভাবে বৈঠক করা হয়েছে।’’
পুরপ্রধান প্রদীপ রায়ের পাল্টা বক্তব্য, “চিঠি পাঠানোর পরেও বোর্ড মিটিংয়ে না এলে আমার কিছু করার নেই। পুর আইন মেনেই বৈঠক সম্পন্ন করে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ অপসারণের চিঠি প্রসঙ্গে তাঁর জবাব, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। দল আমাকে পদে বসিয়েছে। সরে যেতে বললে সরে যাব। কিন্তু তার আগে ওঁদের নানা কথাও বলে যাব।’’
রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, “দল বিষয়টির উপরে নজর রাখছে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ থাকলে দলের অভ্যন্তরেই মিটিয়ে নিতে হবে। তবে সে জন্য উন্নয়ন থমকে থাকার কথা ঠিক নয়।’’