চড়া রোদেই চলছে অনূর্ধ্ব ১৭ ক্রিকেট। —নিজস্ব চিত্র।
খেলা চলছে চড়া রোদে। বারবার বাউন্ডারির কাছে এসে মুখে-হাতে জল নিয়ে যাচ্ছে খেলোয়াড়েরা। তীব্র গরমে যে কোনও সময়ে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে খেলোয়াড়দের কেউ। কিন্তু সেক্ষেত্রে কী করতে হবে, জানা নেই কারও। মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার নানা খেলায় মাঠে প্রাথমিক চিকিৎসারও কোনও ব্যবস্থা না থাকা নিয়ে ক্ষুব্ধ খেলোয়াড় থেকে অভিভাবকেরা।
দুর্গাপুর মহকুমা ক্রীড়া সংস্থা সারা বছরই ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবলের মতো নানা খেলার আয়োজন করে। শহরের বিভিন্ন মাঠে এই সব খেলা চলে। কিন্তু দিন কয়েক আগে ইস্টবেঙ্গলের ক্রিকেটার অঙ্কিত কেশরীর মৃত্যুর পরে মাঠে চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খেলোয়াড়দের মধ্যে। আহত হলে কাউকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স বা গাড়ির ব্যবস্থা তো দূর, প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জামও থাকে না খেলাগুলির সময়ে। খেলোয়াড়দের দাবি, মাঠে যে কোনও সময়ে যে কোনও রকম দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। তা মোকাবিলার জন্য ন্যূনতম কিছু বন্দোবস্ত থাকা প্রয়োজন। কিন্তু মাঠে কোনও চিকিৎসক থাকেন না। খেলোয়াড়দের দেওয়া হয় না চোট এড়ানোর কোনও প্রাথমিক পাঠও।
সম্প্রতি এমএএমসি মাঠে অনূর্ধ্ব ১৭ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার একটি খেলা চলাকালীন গিয়ে দেখা যায়, খেলা পরিচালনার জন্য রয়েছেন হাতে গোনা কয়েক জন। কোনও চিকিৎসক বা অ্যাম্বুল্যান্স নেই। মাঠে ছিলেন মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট বিভাগের সম্পাদক অসীম ঘোষ। তিনি অবশ্য দাবি করেন, সামান্য চোট-আঘাতের চিকিৎসা করার পরিকাঠামো মাঠেই থাকে। গুরুতর কিছু হলে সঙ্গে কাছাকাছি কোনও হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। তবে সমস্যা যে শুধু চিকিৎসাজনিত তা নয়। ক্রীড়া সংস্থার সূচি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বেশ কিছু অভিভাবক। তাঁদের প্রশ্ন, এই গরমে যেখানে বড়রা কাহিল, সেখানে খুদে খেলোয়াড়েরা মাঠে নামবে কী করে? উত্তম দাস নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘‘ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেটের সূচি পাল্টানো প্রয়োজন। তা না হলে অনেক খুদে খেলোয়াড়ই অসুস্থ হয়ে পড়বে।’’ অনূর্ধ্ব ১৭ ক্রিকেটার সোমনাথ দাস, শুভ ভৌমিক বা ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেটার প্রেরক সিংহ, বিশাল সাউরা জানান, গরমে খেলতে খুব কষ্ট হয়। মাঠে চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকা দরকার। অনেক ক্রিকেটার আবার জানায়, গরমের জন্য অনেক অভিভাবক তাদের মাঠে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন।
মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক তাপস সরকার জানান, অ্যাম্বুল্যান্স কেনার আর্থিক অবস্থা তাঁদের নেই। যখন যে এলাকায় খেলা থাকে, তার পার্শ্ববর্তী হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়। তিনি বলেন, ‘‘ক্রীড়া সংস্থার পরিকাঠামো উন্নয়নে সরকারকে আরও পদক্ষেপ করতে হবে।’’ ক্রীড়াসূচি প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ডিসেম্বর, জানুয়ারিতে বিভিন্ন স্কুলের পরীক্ষা থাকে। সে কারণে মরসুম দেরিতে শুরু হয়। মরসুম আরও এগিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।