শহরের পুরনো কাজ মনে করিয়েই লড়াই বামেদের

১৮ বছর বনাম ২০ বছর। কংগ্রেস জমানার সঙ্গে নিজেদের সময়ের তুলনা এভাবেই করছেন বাম নেতারা। এ বারের পুরভোটে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে সামনে রেখে নগরোন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েই লড়াইয়ে নেমেছেন তারা। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৩০ মার্চ কাটোয়া ও দাঁইহাটের জন্য আলাদা ভাবে ইস্তেহার বের করবে বামফ্রন্ট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া: শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৫ ০২:০২
Share:

১৮ বছর বনাম ২০ বছর।

Advertisement

কংগ্রেস জমানার সঙ্গে নিজেদের সময়ের তুলনা এভাবেই করছেন বাম নেতারা। এ বারের পুরভোটে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে সামনে রেখে নগরোন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েই লড়াইয়ে নেমেছেন তারা। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৩০ মার্চ কাটোয়া ও দাঁইহাটের জন্য আলাদা ভাবে ইস্তেহার বের করবে বামফ্রন্ট।

১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত সিপিএমের দখলেই ছিল কাটোয়া পুরবোর্ড। এ বার সেই সময়ে শহরের জন্য কী উন্নয়ন করেছিলেন তারা সেই তালিকায় থাকবে ইস্তেহারে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইস্তেহারে তারা জানাবে, সিপিএমের পুরবোর্ড ১৮ বছর ধরে থাকাকালীন নতুন রাস্তা তৈরি হয়। বাসস্ট্যান্ড গঠন, দমকল, টাউন হল, শ্রাবণী অতিথিশালাও তৈরি যহয়েছিল। তাদের দাবি, বামফ্রন্ট সরকার আবাসন প্রকল্প নেওয়ার ফলেই কাটোয়া শহরে নতুন করে বসবাসের জায়গা তৈরি হয়েছিল। ইস্তেহারে আরও দাবি করা হবে, ১৯৯৫ সাল থেকে কাটোয়া পুরসভায় ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। অথচ বামফ্রন্ট সরকারের আমলে বিভিন্ন ভাবে আর্থিক সহায়তা পাওয়ার পরেও শহরের উন্নয়ন করতে পারেনি তারা। কংগ্রেস পুরবোর্ডের না পারার খতিয়ান দেখাতে বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা, পরিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা না হওয়া, নতুন রাস্তা তৈরি না হওয়া এসবও তুলে ধরবে সিপিএম। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের ১৮ বছরের সঙ্গে কংগ্রেস পুরবোর্ডের ২০ বছরে কাটোয়া শহরে কী কী উন্নয়ন হয়েছে তা খতিয়ে দেখার আবেদন নিয়ে প্রার্থীরা মানুষের কাছে যাবেন।” এমনিতেই, রাজ্যের ৯২টি পুরসভার নির্বাচনের জন্য বামফ্রন্ট যে ইস্তেহার প্রকাশ হয়েছে, সেখানে পুরবোর্ড চালানোয় দুর্নীতি, গৃহ নির্মাণ আইনকে তোয়াক্কা না করা, ইত্যাদি বেনিয়মের বিরুদ্ধে প্রচার করার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে দাবি করা হয়েছে যে, বামেরা ক্ষমতা পেলে প্রতিটি পুরসভায় অন্তত ২৫ শতাংশ টাকা বস্তি ও গরিব শহরবাসীর জন্য খরচ করা হবে।

Advertisement

রাজ্যের অন্যত্র তৃণমূল ও বিজেপি মূল প্রতিপক্ষ হলেও কাটোয়া ও দাঁইহাটে সিপিএমের লড়াই কংগ্রেস ও তৃণমূলের সঙ্গে। কাটোয়াতে গত পুর নির্বাচনে একটি আসনও পায়নি সিপিএম। এমনকী লোকসভা ফলাফলের বিচারেও শহরের ২০টি ওয়ার্ডেই সিপিএমের ফল ভাল হয়নি। বরং ভোট কাটাকুটির খেলায় দাঁইহাটে সিপিএম লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে ৬টি আসনে জিতেছে। কয়েকদিনের মধ্যে কংগ্রেসও ইস্তেহার প্রকাশ করবে। সেখানে কাটোয়া শহরের সামগ্রিক উন্নয়নের কথাই তুলে ধরা হবে বলে কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে। শহরের নতুন রাস্তাঘাট, পরিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ, আলো, সৌন্দর্য্যায়ন প্রভৃতি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হবে সেখানে। সিপিএমের ইস্তেহারে থাকবে বিজেপির সমালোচনাও। অঞ্জনবাবু বলেন, “আমাদের কাছ থেকে যে সব ভোটার চলে গিয়েছেন এবং তৃণমূল-বিজেপিকে যাঁরা ভোট দিচ্ছেন, সেই সব মানুষকে ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করা হবে।”

বামফ্রন্টের দাবি, ক্ষমতায় এলে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ঘিরেই কাটোয়া শহরে উন্নয়ন করতে চাইবে তারা। তাদের দাবি, কাটোয়া শহর আকারে বেড়ে জাজিগ্রাম ও পাঁচঘড়া মোড় পেরোবে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রভাব শহরের বাসিন্দাদের জীবনেও পড়বে। গ্রামীণ জনপদ বড় জনপদের দিকে এগোবে। ইস্তাহারে বলা হবে, নতুন করে শহর গড়ার কাজ এই সময়ের মধ্যে থেকেই করতে হবে। এ ছাড়াও কাটোয়াকে কেন্দ্র করে পর্যটন, শহরে বিনোদন পার্ক, জলাভূমি বোজানো রোধ করার কাজেও এগোবে পুরসভা। অঞ্জনবাবুর দাবি, “কাটোয়া শান্ত শহর। কিন্তু বর্তমানে শহর অশান্ত হওয়ার পথে। তা যাতে না হয় তার জন্য প্রশাসন ও জনগনকে নিয়ে চেষ্টা করবে পুরসভা।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement