সমালোচনা যতই করুক, হাঁটছে তারা তাঁর পথেই! কন্যাশ্রী থেকে সবুজসাথী, বৈতরণী থেকে সবুজশ্রী—তাঁর আমলে চালু হওয়া একের পর এক সরকারি প্রকল্পের অভিনব নামকরণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের ফল বলছে, প্রকল্পগুলি ‘ডিভিডেন্ড’ দিয়েছে তৃণমূলকে। এ বার ‘নামকরণের’ দৌড়ে সামিল হচ্ছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা সিপিএম। দুর্গাপুরে পুরভোটে জিতে ক্ষমতায় এলে যে সব পরিষেবা দেওয়া হবে, সেগুলির নাম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
‘নির্মল ধারা’, ‘মিশন নির্ভয়া’, ‘শ্রীচরণেষু’— এমন সব নাম সিপিএমের অন্দরে ঘোরাফেরা করছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। পুরবোর্ড দখল করলে একশোটি জলের গাড়ি আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য তৈরি রাখা থাকবে। এরই পোশাকি নাম ‘নির্মল ধারা’। ‘শ্রীচরণেষু’ পরিষেবায় প্রবীণ নাগরিকেরা বছরে দু’বার নিখরচায় স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে পারবেন। মহিলাদের নিরাপত্তায় টোল-ফ্রি নম্বর ও রানি লক্ষ্মীবাই বাহিনী তৈরির যে প্রস্তাবিত প্রকল্প, তার নাম দেওয়া হবে ‘মিশন নির্ভয়া’। ফি বছর শহরে একশো জন দুঃস্থ মেধাবী পড়ুয়ার নিখরচায় পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হবে, যার নাম হবে ‘শত পুষ্প বিকশিত হোক’। পুরসভা বা পরিষেবা নিয়ে নাগরিকদের অভিযোগ থাকলে, তা জানাতে তৈরি হবে ‘পাশে আছি’।
বছর দু’য়েক ধরে তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে ‘রক্ষা করো আমার শহর’ স্লোগানকে সামনে রেখে লাগাতার কর্মসূচি নিয়েছিল সিপিএম। গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে সমর্থন দিয়ে দুর্গাপুর পূর্ব ও পশ্চিম, দু’টি আসনেই তৃণমূলকে হারিয়েছে সিপিএম। পুরভোটের মুখে মানুষের কাছে পৌঁছতে বিভিন্ন পন্থা নিচ্ছে জেলা সিপিএম। নির্বাচনী ইস্তাহারে কী থাকবে, কিছু দিন আগেই সে বিষয়ে ফেসবুকে পেজ খুলে শহরবাসীর মতামত জানতে চেয়েছিল সিপিএম। দল সূত্রের খবর, সেই সব মতামতই ইস্তাহারে গুরুত্ব পাবে। এ বার জনসংযোগ বাড়াতে নামকরণের অভিনব পরিকল্পনা।
যদিও প্রস্তাবিত পরিষেবার ‘নামকরণ’-র বিষয়টিকে তৃণমূল নেতৃত্ব কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। তাঁদের দাবি, দিনে জেগে স্বপ্ন দেখছে সিপিএম। ভোট হল না, এখনই জিতবে ধরে নিয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি (দুর্গাপুর) উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর দেখানো পথকেই ওরা নকল করছে। তবে, পুরভোটেই সিপিএম এর জবাব পাবে।’’ অভিযোগ মানছেন না সিপিএম নেতৃত্ব। দলের জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের কথায়, ‘‘সংশ্লিষ্ট পরিষেবাগুলিকে চিহ্নিত ও জনপ্রিয় করতেই নামকরণ করা হয়েছে।’’