শোক: নিহতের পরিজনদের সঙ্গে মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। নিজস্ব চিত্র
সকাল পর্যন্ত মৃত্যুসংবাদ জানানো হয়নি তাঁদের। তাঁরা জানতেন, ছেলের অস্ত্রোপচার হচ্ছে। তাই সকালের গ্রিলের দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে বহু মানুষের জটলা দেখে অবাক হয়েছিলেন বৃদ্ধ তবারক খান। পারিবারিক বন্ধু মহম্মদ আলিমুদ্দিনকে ডেকে প্রশ্ন করেন, ‘‘খালেদ কেমন আছে এখন?’’ আলিমুদ্দিন কোনও মতে জবাব দেন, ‘‘ভাল আছে।’’ তার পরে আর সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেননি তিনি।
শুধু বাবা-মা নন, বরাকরের মনবেড়িয়ায় কাউন্সিলর খালেদ খানের স্ত্রী রাজিয়া বিবিকেও রবিবার সকালে দুঃসংবাদ দেওয়া হয়নি, জানান প্রতিবেশী বিভাস সিংহ। এগারো মাসের মেয়েকে কোলে নিয়ে রাজিয়া ঘনঘন গ্রিল থেকে মুখ বাড়িয়ে বোঝার চেষ্টা করছিলেন, এত জটলা কেন। আঁচ করছিলেন, খারাপ কিছু ঘটেছে।
দুপুর আড়াইটে নাগাদ খালেদের দেহ আনা হয় বাড়িতে। কান্নায় ভেঙে পড়েন স্ত্রী রাজিয়া। জ্ঞান হারান মা জারিনা বিবি। বিলাপ করছিলেন বাবা তবারক। কী হয়েছে, বুঝে উঠতে পারছিল না খালেদের বছর পাঁচেকের ছেলে কবির। সাদা চাদরে মোড়া বাবার দেহের দিকে চুপ করে তাকিয়ে ছিল সে।
খালেদের খুনের ঘটনায় শোকের ছায়া গোটা এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দা রমেশ যাদব বলেন, ‘‘কোনও কাজ থেকে মুখ ফেরাত না। রাতবিরেতে প্রয়োজন হলে কাছে পাওয়া যেত খালেদকে।’’ আর এক বাসিন্দা নইম আনসারি জানান, এই ঘটনার পরে রবিবার পারিবারিক অনুষ্ঠান বাতিল করে দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের খুব কাছের লোক ছিল খালেদ। তাই অতিথিদের কাছে ক্ষমা চেয়ে তাঁদের আসতে নিষেধ করেছি।’’
আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘আমরা খালেদের পরিবারের পাশে সব সময় থাকব।’’