প্রতীকী ছবি।
জেলা প্রশাসন আসানসোলে আটকে থাকা কাশ্মীরি শাল বিক্রেতাদের ঘরে ফেরাতে তোড়জোড় করার কথা জানিয়েছে। কিন্তু দুর্গাপুর মহকুমাতেও আটকে রয়েছেন প্রায় ৫০ জন কাশ্মীরি শাল বিক্রেতা। বিক্রেতাদের দাবি, প্রশাসন তাঁদের দ্রুত বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করুক।
প্রতি বছর শীতের শুরুতে শীতবস্ত্রের পসরা নিয়ে রাজ্যে আসেন কাশ্মীরি বিক্রেতারা। ফিরে যান গরম পড়ার আগে। কিন্তু এ বার ‘লকডাউন’-এর জেরে পরিস্থিতি বদলেছে। আটকে পড়েছেন তাঁরা। আসানসোলে এমন ৬০ জন আটকে পড়া কাশ্মীরি শাল বিক্রেতাকে বাড়ি পাঠানোর কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। এই খবর শুনে দুর্গাপুরে আটকে পড়া বিক্রেতারাও বাড়ি ফেরার আর্জি জানিয়েছেন।
বেনাচিতিতে প্রায় ১৫-২০ জন কাশ্মীরি বিক্রেতারা রয়েছেন। বিক্রেতারা জানান, প্রতি বছর অক্টোবরের শুরুতে তাঁরা আসেন। বাড়ি ফেরেন মার্চের শেষে। এ বারেও তেমনই পরিকল্পনা নিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু ‘লকডাউন’-এর জেরে তাঁরা আটকে পড়েছেন। তাঁরা জানান, ঘরভাড়া দিতে হচ্ছে। অথচ, রোজগার নেই। ফলে, চরম সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত ফিরতে না পারলে এ বার খাবার জোগাড় করাটাও সমস্যার হয়ে দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা তাঁদের।
খাবারের সমস্যা ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বলে জানান রানিগঞ্জে আটকে পড়া কাশ্মীরি বিক্রেতা মঞ্জুর আহমেদ হাজারি। তিনি রানিগঞ্জ থেকে সম্প্রতি এসে উঠেছেন অণ্ডালে গোলাম রসুল কাদরির কাছে। গোলাম জানান, তাঁদের দু’জনের বাড়িই শ্রীনগরে। দীর্ঘ দিনের পরিচিত তাঁরা। মঞ্জুর বলেন, ‘‘বাড়িতে বাবা, মা, স্ত্রী, দুই সন্তান রয়েছে। আমার রোজগারেই সংসার চলে। ও দিকে, সংসারে সমস্যা শুরু হয়েছে। এ দিকে, এখানে খেতে পাচ্ছি না। আমাদের দ্রুত বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করুন।’’ গোলাম বলেন, ‘‘আমাদের সবারই খুব খারাপ অবস্থা। রোজগার নেই। ঘরভাড়া দিতে হচ্ছে। বাড়িতে স্ত্রী, মেয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। প্রায় সাড়ে তিন দশক ধরে আসছি এখানে। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি এই প্রথম। রাজ্য প্রশাসনের কাছে আমাদের আবেদন, সবাইকে কাশ্মীরে ফেরার ব্যবস্থা করা হোক।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কাশ্মীরি বিক্রেতাদের ঘরে ফেরাতে ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক পর্যায়ে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ধাপে-ধাপে তাঁদের বাসে বা ট্রেনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে বলেন, ‘‘দুর্গাপুর মহকুমায় আটকে থাকা কাশ্মীরি শাল বিক্রেতারা এ বিষয়ে ব্লক ও মহকুমা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।’’