Coronavirus

আটকে থাকা শ্রমিকদের তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত

দেশ জুড়ে ‘লকডাউন’-এর জেরে ভিন্‌ রাজ্যে আটকে পড়েছেন এ রাজ্য থেকে কাজে যাওয়া বহু শ্রমিক। নানা মাধ্যমের সাহায্যে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থার আর্জি জানাচ্ছেন তাঁদের অনেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২০ ২৩:৫৬
Share:

ফাইল চিত্র

প্রশ্নটা বারবার উঠেই থাকে। করোনার ধাক্কার জেরে এ বার উদ্যোগী হল পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। এলাকায় খোঁজ নিয়ে কারা ভিন্‌ রাজ্যে কাজে গিয়ে আটকে পড়েছেন, সেই তালিকা তৈরি করছে প্রশাসন।

Advertisement

দেশ জুড়ে ‘লকডাউন’-এর জেরে ভিন্‌ রাজ্যে আটকে পড়েছেন এ রাজ্য থেকে কাজে যাওয়া বহু শ্রমিক। নানা মাধ্যমের সাহায্যে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থার আর্জি জানাচ্ছেন তাঁদের অনেকে। স্থানীয় সূত্রের খবর, কালনা ও কাটোয়া মহকুমা থেকে কাজে গিয়ে তেলঙ্গনায় আটকে রয়েছেন কয়েকশো জন। এ ছাড়াও মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, কেরল, তামিলনাড়ুতে ‘পরিযায়ী’ শ্রমিক হিসাবে কাজে গিয়ে আটকে অনেকে। ‘লকডাউন’ চলাকালীন তাঁদের বাড়ি ফেরানোর উপায় নেই। তবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যে যাতে তাঁদের থাকা-খাওয়ার সমস্যা না হয়, সে জন্য উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন।

জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘বিচ্ছিন্ন ভাবে তথ্য আসছে। সে কারণে কে কোন রাজ্যে আটকে, সেই খোঁজ নিতে বিডিও-র মাধ্যমে এক আধিকারিককে ঠিক করেছি। গ্রামে গিয়ে খোঁজ নিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে চিঠি পাঠিয়েছেন। প্রয়োজনে আমরাও যোগাযোগ করব। পরিবহণ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় ফেরত আনার বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে খুব গুরত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘বাড়ি-বাড়ি খোঁজ নেওয়া হবে। মোবাইল নম্বর-সহ তালিকা তৈরি করা হবে। এর ফলে আমাদের জেলা থেকে ভিন্‌ রাজ্যে কত জন যান, কেন যাচ্ছেন, তার একটা ‘ডেটা ব্যাঙ্ক’ও তৈরি হয়ে যাবে।’’

Advertisement

এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নানা রাজ্যে আটকে থাকা শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের লোকজন। তাঁদের মতে, কোনও সমস্যা দেখা দিলে হইচই শুরু হয়। অসহায় পরিজনেরা ভিড় করেন প্রশাসনের কাছে। শ্রমিকদের বেশিরভাগের দাবি, করোনার জেরা আটকে পড়ার পরে হাতে টাকা নেই। খাবারের সংস্থান নেই। ভাড়া বাড়ি ছাড়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। রাস্তায় গেলে পুলিশ তাড়া করছে। অনেক শ্রমিকের কথায়, ‘‘পেটের টানে ঘর ছেড়ে আসতে হয়েছে। এখন হয়তো নিঃস্ব হয়ে ফেরত যেতে হবে!’’ কবে বাড়ি ফিরতে পারবেন, সেটাই এখন তাঁদের চিন্তা।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে বিভিন্ন ব্লকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ব্লক অফিসের কর্মীরা তথ্য সংগ্রহে নেমে পড়েছেন। সেই তথ্য সংশ্লিষ্ট রাজ্যের জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পূর্বস্থলী ২, কাটোয়া ১ ব্লকের কয়েকজন মিষ্টি দোকানের কারিগর হিসাবে কাজ করতে গিয়ে তেলঙ্গনার সাঙ্গাবাড়ি জেলায় আটকে রয়েছেন। রবিবার তাঁরা ফোনে বলেন, ‘‘এখানকার জেলা প্রশাসন আমাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।’’

‘লকডাউন’-এর ফলে কোনও পরিবার যাতে অভুক্ত না থাকে, সে বিষয়েও উদ্যোগ হয়েছে বলে জানায় জেলা প্রশাসন। কোনও পরিবার সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত বা পুরসভার কাছে সমস্যার কথা জানালে প্রশাসন খাবার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন।

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement