বন্ধ দোকানপাট। নিজস্ব চিত্র
‘সেল, সেল’ চিৎকার আর ফুটপাত উপচে থাকা বিছানার চাদর, শাড়ি-জামায় হাঁটা যায় না এই সময়। দুপুরে কড়া রোদে একটু ফাঁকা থাকলেও বিকাল হতেই চৈত্র সেলে ছেয়ে যায় বাজার। তবে এ বার সবই ফাঁকা।
ব্যবসায়ীদের দাবি, এই সময়ের জন্য আগেই পণ্য তুলে নেন তাঁরা। কিন্তু বাজার বসার আগেই করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে ‘লকডাউন’ শুরু হয়ে সমস্ত বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। এতে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে, দাবি তাঁদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস দুয়েক আগে থেকেই ব্যবসায়ীরা কলকাতা-সহ নানা পাইকারি বাজার থেকে শাড়ি, জামা, চুড়িদার, গৃহস্থালির জিনিস মজুত করতে শুরু করেন। শপিং মল, বড় দোকান থেকে শুরু করে ফুটপাতেও চলে নানা ছাড়। জিনিস অনুযায়ী ছাড়ের তারতম্য হয়।
কালনার নিভুজিবাজার এলাকার এক ব্যবসায়ী নরেন মজুমদার বলেন, ‘‘লকডাউনের আগেই দোকানে সেলের জন্য জামাকাপড় কিনে ফেলেছিলাম। সব পড়ে রয়েছে। লকডাউন উঠে গেলেও সেই সব কেনার খরিদ্দার হয়তো পাওয়া যাবে না। বিপুল লোকসান হবে।’’ কালনার বাসিন্দা রাজেন পণ্ডিতও বলেন, ‘‘সারা বছর ঘুরে ঘরে হকারের কাজ করি। চৈত্র মাসের শেষ দিন দশেক ফুটপাতে সস্তার রেডিমেড প্যান্ট, জামা বিক্রি করি। একশো-দেড়শো টাকার প্যান্ট-জামা কেনার খরিদ্দারের অভাব হয় না। বাড়তি কিছু রোজগার হয়। এ বার সবই বৃথা গেল।’’
শহরের বৈদ্যপুর মোড়ের একটি শপিংমলের মালিক আশিস হালদারও জানান, সারা বছর জামা কাপড়ের বিক্রির একাংশ বেশ কিছুটা ছাড় দিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়। তাতে মজুত জামা কাপড় কিছুটা কমে। এ বার সেলের প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গেলেও লকডাউনের জেরে দোকান খোলা গেল না। তাঁর দাবি, ‘‘শুধু চৈত্র সেল নয়, পয়লা বৈশাখ এবং ইদকে সামনে রেখে ভাল বাজার থাকে প্রতিবার। কারণ গ্রামাঞ্চলে সাধারণ চাষিরা আলু, পেঁয়াজ বিক্রি করে লাভের টাকা ঘরে তোলেন এই সময়ে। সে বাজারও এ বার ধরা গেল না।’’
শুধু কালনা শহর নয়, ধাত্রীগ্রাম, পাটুলি, পূর্বস্থলী, কুসুমগ্রাম, মালডাঙা সর্বত্রই ছবিটা একই রকম। চৈত্রের দুপুর থেকে রাত পথঘাট নিশ্চুপই।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)