প্রতীকী ছবি।
করোনা-পরীক্ষার জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালের মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি ভবনের একটি ঘরে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ‘আরটিপিসিআর’ (‘রিয়েল টাইম রিভার্স ট্রান্সক্রিপশান পলিমারেজ চেন রিঅ্যাকশন’) পরীক্ষাকেন্দ্র গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এমনটাই জানিয়ে, জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, সব ঠিক থাকলে ডিসেম্বরের গোড়ায় পরীক্ষাকেন্দ্রটি চালু হবে। তবে করোনা নির্ণয়ের এই পরীক্ষাকেন্দ্র চালুর আগে বিশেষজ্ঞ কর্মীর ‘অভাব’ রয়েছে বলে অভিযোগ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের ডাক্তারদের একাংশের।
জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষজ্ঞ দল হাসপাতালে এসে পরিকাঠামো দেখে গিয়েছেন। এই কেন্দ্র তৈরিতে প্রাথমিক ভাবে ৬০ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি পাঠানো শুরু হয়েছে। ছটপুজোর পরে, কাজে আরও গতি আসবে।’’
এই হাসপাতালে আসা রোগীদের করোনা সংক্রমণ হয়েছে কি না, তা জানতে এখন ট্রুন্যাট ও র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করানো হয়। চিকিৎসকেরা জানান, করোনা সংক্রমণ বিষয়ে জানতে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি হল ‘আরটিপিসিআর’। এখন এই হাসপাতালে আসা রোগীরা করোনা সংক্রমিত কি না, তা জানতে লালারসের নমুনা কাঁকসার কোভিড-হাসপাতাল, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল অথবা কলকাতার কোনও কোভিড-হাসপাতালেপাঠাতে হয়।
ডাক্তারদের একাংশ জানান, এর ফলে পরীক্ষার ফল জানতে অনেকটাই দেরি হচ্ছে। যতদিন ফল জানা যাচ্ছে না, ততদিন রোগীরা অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকছেন। অনেকের ঠিকমতো চিকিৎসাও করা যাচ্ছে না। ফলে, গত অগস্ট থেকেই জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা এখানে একটি আরটিপিসিআর পরীক্ষাকেন্দ্র তৈরির আর্জি জানাচ্ছিলেন। চিকিৎসকদের দাবি, এটি তৈরি হলে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে করোনা পরীক্ষার ফল জানা সম্ভব হবে।
তবে চালু হওয়ার পরেও বিশেষজ্ঞ কর্মীর অভাবে আদৌ এই পরীক্ষাকেন্দ্রটি কতটা সফল ভাবে কাজ করতে পারবে, তা নিয়ে সংশয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডাক্তারদের একাংশ। যদিও, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, বর্তমানে সাধারণ রোগ নির্ণয়কেন্দ্রে যে বিশেষজ্ঞেরা আছেন, তাঁরা সকলেই আরটিপিসিআর পরীক্ষার বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। কিন্তু প্রতিদিন এই হাসপাতালে খুব কম করে একশো জন রোগী লালারসের নমুনা পরীক্ষা করাতে আসছেন। এত সংখ্যক রোগীর পরীক্ষার চাপ, তুলনায় অনেক কম সংখ্যক বিশেষজ্ঞ কর্মীরা নিতে পারবেন না বলেই মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। হাসপাতাল সূত্রেও জানা গিয়েছে, এখন মাইক্রোবায়োলজিস্ট আছেন দু’জন। দরকার, আরও অন্তত তিন জনের। ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান আছেন দশ জন। দরকার, আরও ছ’জন। ছ’জন ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের দরকার হলেও নেই এক জনও। বিশেষজ্ঞ কর্মীর এই ‘অভাব’ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি হাসপাতাল সুপার নিখিলবাবু। তবে তাঁর দাবি, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সব খবরই রয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রটি তৈরি করার আগে, তাঁরা নিশ্চই সব দিক বিবেচনা করেছেন।’’