এই অ্যাম্বুল্যান্সেই নিয়ে যাওয়া হয় মৃতদেহ। নিজস্ব চিত্র।
কোভিডে মৃত্যুর পর দেহ বাড়িতেই পড়ে রইল আট ঘণ্টা। পাড়া প্রতিবেশী কেউ এগিয়ে না আসায় কোভিডে মৃত বধূর দেহ উদ্ধার করে দূরের শ্মশানে নিয়ে যেতে হল প্রশাসনকে।
শুক্রবার সারাদিন বাড়িতেই পড়ে রইল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার জামুদহ গ্রামের বধূ পম্পা নন্দীর মৃতদেহ। প্রশাসন মৃতদেহ উদ্ধারের ব্যবস্থা করলেও গ্রামের শ্মশানে মৃতদেহ সৎকার নিয়ে তৈরি হল আপত্তি। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় অ্যাম্বুল্যান্সে বধূর মৃতদেহ সৎকারের জন্যে নিয়ে যাওয়া হল বর্ধমানের নির্মলঝিল শ্মশানে । সেখানেও যাওয়ার ব্যাপারে পরিজনদের কেউ যেমন যাওয়ার আগ্রহ দেখালেন না। এগিয়ে এলেন না পাড়ার কেউ।
জামালপুরের থানার বেরুগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম জামুদহ । এই গ্রামেই শ্বশুরবাড়ি ৩৬ বছরের পম্পা নন্দীর। তাঁর স্বামী ও একমাত্র অন্তঃসত্ত্বা মেয়েও কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন। বাড়িতেই ছিলেন তাঁরা। বাড়িতেই থেকেই কোভিডের ওষুধ খাচ্ছিলেন তিনিও । কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। শুক্রবার বাড়িতেই তাঁর মূত্যু হয় ।
বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার বলেন , ‘‘শুক্রবার দুপুর ৩ টে নাগাদ খবর আসে জামুদহ গ্রামের এক কোভিডে মৃত মহিলার দেহ বাড়িতেই পড়ে রয়েছে । সংক্রমিত হয়ে পড়ার আতঙ্কে কেউ মৃতদেহে হাত দিতে চাইছেন না । মৃতদেহ সৎকারেও কেউ যেতে চাইছেন না । বিষয়টি জানার পরেই বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় । এরপরেই পঞ্চায়েত কর্মী অমিত মণ্ডল ও পঞ্চায়েত সদস্য সেখ সাহাবুদ্দিন ওরফে দানি কোভিডে আক্রান্ত মৃতদেহ উদ্ধারে বিশেষভাবে তৎপরতা শুরু করেন।'' এরপর জামালপুর ব্লক হাসপাতাল থেকে মহিলার ডেথ সার্টিফিকেট সংগ্রহ করা হয় । পাশাপাশি ৪ টি পিপিই কিটের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় । পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ৪ জন স্বেচ্ছাসেবককে জোগাড় করেন। তারাই পিপিপই কিট পড়ে মৃতদেহ ঘর থেকে বের করে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেন । সৎকারের জন্যে ওই মহিলার মৃতদেহ গ্রামের শ্মশানের পরিবর্তে বর্ধমানের নির্মলঝিল শ্মশানে পাঠানো হয়।