জনবহুল: কাটোয়ার রাস্তায় বৃহস্পতিবার। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়
ফের এক দিনে কাটোয়া শহরের বেশ কয়েকজনের করোনা-রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ এল। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার কাটোয়া শহরে ১৭ জন করোনা-আক্রান্তের হদিস মেলার খবর আসে। তাঁদের মধ্যে ১০ জন স্বাস্থ্যকর্মী। তা জানার পরেই চিন্তা বেড়েছে কাটোয়া মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের কর্তাদের। ওই স্বাস্থ্যকর্মীরা শহরের দু’টি নার্সিংহোম ও পুরসভার পলিক্লিনিকের সঙ্গে যুক্ত। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, ওই দুই নার্সিংহোম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে ভর্তি থাকা রোগীদের সেখানেই ‘আইসোলেশন’ করা হয়েছে। পুরসভার পলিক্লিনিকের আক্রান্ত দুই স্বাস্থ্যকর্মীকে ‘সেফ হাউসে’ পাঠানো হয়েছে।
কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দিনকয়েক আগে দু’দফায় কাটোয়া শহরে প্রায় ৪০ জন করোনা-আক্রান্তের খোঁজ মেলে। তাঁদের মধ্যে পুরসভার নানা বিভাগের কর্মী, কাটোয়া মহকুমা হাসাতালে ভর্তি থাকা প্রসূতি ও এক চিকিৎসক ছিলেন। এর পরেই হাসপাতালে রোগী ভর্তি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। প্রসূতি বিভাগ বন্ধ রাখা হয়। ফলে, প্রসূতিরা নার্সিংহোমের উপরে নির্ভরশীল ছিলেন।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৫ জুলাই হাসপাতালে লালারসের নমুনা দেওয়া ১৮ জনের করোনা-রিপোর্ট এ দিন ‘পজ়িটিভ’ আসে। তাঁদের মধ্যে কাটোয়া শহরের মণ্ডলপাড়া তেঁতুলতলার একটি নার্সিহোমের সাত স্বাস্থ্যকর্মী, সার্কাস ময়দানের এক নার্সিংহোমের এক কর্মী ও পুরসভা পরিচালিত বিসি রায় পলিক্লিনিকের দু’জন কর্মী রয়েছেন। মহকুমা হাসপাতালের পরে দু’টি নার্সিংহোমেও করোনা-হানা দেখা দেওয়ায় দুশ্চিন্তার মেঘে ছেয়েছে শহর।
কাটোয়া মহকুমা স্বাস্থ্য দফতরের অবশ্য আশ্বাস, প্রসূতি-সহ যে কোনও গুরুতর রোগীকে হাসপাতালেই বিকল্প জায়গায় রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার তথা ভারপ্রাপ্ত এসিএমওএইচ রতন শাসমল বলেন, ‘‘নার্সিংহোম দু’টিতে নতুন রোগী ভর্তি নিতে নিষেধ করা হয়েছে। ভর্তি থাকা রোগীদের করোনা-পরীক্ষার রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত, তাঁদের ছাড়া হবে না। স্বাস্থ্যকর্মীদের সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোমেই ‘আইসোলেশন’-এ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
কাটোয়া পুরসভার প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘শহরে করোনা-সংক্রমণ যে ভাবে বাড়ছে, তা খুবই চিন্তার বিষয়।’’ মহকুমাশাসক (কাটোয়া) প্রশান্তরাজ শুক্ল বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হওয়ায় নার্সিংহোম দু’টি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্যানিটাইজ় করার কাজও শুরু হয়েছে।’’