প্রতীকী ছবি
‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকা মানুষজন সবাই ঘরে থাকছেন কি না, তা নিয়ে সংশয়ে জেলার নানা প্রান্তের বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, নিয়ম না মানায় করোনা-আতঙ্ক বাড়ছে। তবে ‘কোয়রান্টিন’-এ থাকা মানুষজনের দাবি, তাঁরা নিয়ম মেনেই চলছেন। স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা নিয়ম মেনে তাঁদের দেখেও আসছেন।
ইসিএল সূত্রে জানা যায়, ডিসেরগড়ে সংস্থার সদর কার্যালয়ে কর্মরত এক আধিকারিক সম্প্রতি তাইল্যান্ড বেড়াতে যান। দিন চারেক আগে দেশে ফেরেন। তাঁকে দমদম বিমানবন্দর থেকেই ১৪ দিন ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু সংস্থা সূত্রে খবর, তিনি সেই পরামর্শ না মেনে বুধবার কাজে যোগ দেন। ইসিএলের এক কর্তা জানান, বিষয়টি জানাজানি হতেই ওই আধিকারিককে শুক্রবার থেকে ছুটি দিয়ে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ পাঠানো হয়েছে।
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি থেকে দুর্গাপুরে বাড়ি ফিরেছেন পেশায় জাহাজের কর্মী এক যুবক। তাঁর দাবি, একাধিক বিমানবন্দরের পরীক্ষায় তাঁর করোনা-উপসর্গ নেই বলে জানানো হয়েছে। ওই যুবকের বাবা দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডের (ডিপিএল) কর্মী। তাঁকে ডিপিএল ছুটিতে পাঠিয়েছে। কিন্তু বাবা ও ছেলে বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছেন বলে দাবি করেছেন পড়শিরা। শুক্রবার দুর্গাপুর পুরসভার দুই স্বাস্থ্যকর্মী বাবা-ছেলেকে দেখতে গিয়েছিলেন। যুবককে ফোন করে শারীরিক অবস্থা জানতে চায় প্রশাসন।
দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের ‘সেল কো-অপারেটিভ’ এলাকার বাসিন্দা এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ইটালি থেকে দেশে ফেরেন। কলকাতার ফ্ল্যাটে তিনি ১৪ দিন ‘হোম-কোয়রান্টিন’-এ ছিলেন। শেষ দিন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে গেলে তাঁর করোনা-উপসর্গ না থাকায় পরীক্ষার দরকার নেই বলা হয়। এর পরে তিনি দুর্গাপুরে মায়ের কাছে চলে আসেন। কিন্তু ‘হেল্পলাইন’-এ ফোন করলে বলা হয়, আরও ১৪ দিন ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকলে ভাল। কিন্তু পড়শিদের একাংশের অভিযোগ, ওই বাড়ির পরিচারিকা আরও কয়েকটি বাড়িতে কাজ করেন। ফলে, তাঁর থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর ভয় রয়েছে। তবে ওই ব্যক্তির দাবি, স্বাস্থ্য দফতরের নিয়ম মেনে বাড়ির দু’টি আলাদা ঘরে তিনি ও তাঁর মা থাকেন। ফলে, সংক্রমণের ভয় অমূলক।
এই পরিস্থিতিতে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দাসের পরামর্শ, ‘‘হোম কোয়রান্টিন-এ থাকা মানুষজন অত্যন্ত জরুরি প্রয়োজনে সাবধানতা নিয়ে বাইরে বেরোতে পারেন। কিন্তু উপসর্গ না থাকলেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে হোম কোয়রান্টিন-এ থাকা জরুরি।’’ মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক বিদেশ-যোগ রয়েছে যাঁদের, তাঁদের সবার সঙ্গেই স্বাস্থ্য দফতর যোগাযোগ রেখে চলেছে। খবর পেলে স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন।’’