বর্ধমানের উদয়পল্লিতে ‘সিল’ করা হল আক্রান্তের এলাকা। নিজস্ব চিত্র
ভিন্ রাজ্য থেকে শ্রমিকেরা এলাকায় ফিরতে শুরু করার পরেই বাড়তে শুরু করেছে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, কালনা মহকুমায় এখনও পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচ জন। তাঁরা সকলেই ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরেছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় কালনা ১ ব্লকের বেগপুর পঞ্চায়েতের ফকিরডাঙা ও কালনা ২ ব্লকের পূর্ব সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের নসিপুর গ্রামে মুম্বই ফেরত দু’জনের করোনা-রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসে। এসটিকেকে রোডের পাশে একটি সরু রাস্তা গিয়ে মিশেছে নসিপুরে। গ্রামের একটি পাড়া বাঁশের ব্যারিকেড করে ‘সিল’ করা হয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা জানান, বছর সাতাশের যে যুবক করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন, তিনি বছর তিনেক ধরে মুম্বইয়ে গয়না তৈরির কাজ করতেন। সম্প্রতি বাড়ি আসেন। তাঁর সঙ্গে আসেন ওই এলাকায় কাজ করা আর এক যুবক। তবে তাঁর রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ এসেছে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই যুবক বর্ধমানে শারীরিক পরীক্ষা ও লালারসের নমুনা দেওয়ার পরে বাড়ি ফিরেছিলেন। বাড়ির দোতলার একটি ঘরে থাকতেন। পুলিশ তাঁকে কাঁকসার একটি হাসপাতালে ভর্তি করেছে। আক্রান্তের বাড়ির লোকজনকে বাইরে বেরোতে বারণ করা হয়েছে। গ্রামবাসীর একাংশের দাবি, গোটা এলাকাটি ‘স্যানিটাইজ়’ করার প্রয়োজন রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা বশিরুদ্দিন মোল্লা দাবি করেন, ‘‘এলাকায় এক জন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে এলাকায়।’’ কালনা ২ বিডিও মিলন দেবগড়িয়া জানান, গ্রামে স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশ কাজ শুরু করেছে।
মুম্বই থেকেই ১৮ মে ফিরেছিলেন কালনার বেগপুর পঞ্চায়েতের ফকিরডাঙা গ্রামের এক যুবক। বর্ধমানে নমুনা জমা দিয়ে পরদিন বাড়ি ফেরেন। পঞ্চায়েতের প্রধান অসীম মিত্র জানান, ফেরার পরে, ওই যুবক বাড়িতেই থাকতেন। শুক্রবার রাতে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁর সংস্পর্শে আসা মানুষজনকে নিভৃতবাসে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আক্রান্তের এলাকা ‘সিল’ এবং ‘স্যানিটাইজ়’ করা হয়েছে।
পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় চিন্তায় এলাকার অনেকেই। কালনার বাসিন্দা চিত্ত সরকার দাবি করেন,বহু শ্রমিক আসায় নিভৃতবাস কেন্দ্রগুলি ভরে উঠছে। তাঁদের অনেকে বাইরে থেকে নানা জিনিসপত্র জোগাড়ের চেষ্টা করছেন। তাঁদের কাছে বেশি দামে জিনিস বিক্রি করার জন্য এলাকার কিছু লোকজন যাতায়াত শুরু করেছেন সেখানে। ফলে, সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে বলে তাঁর দাবি। কালনা মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই জানান, নিভৃতবাস কেন্দ্রগুলিতে নিয়মিত ‘মেডিক্যাল টিম’ পাঠানো হচ্ছে। নজরে রাখা হচ্ছে আবাসিকদের।
বর্ধমানের উদয়পল্লিতে এক শিশুর করোনা ধরা পড়ে শুক্রবার। সেই এলাকাও ‘সিল’ করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে।