দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড। — ফাইল চিত্র।
বয়লারের টিউবে ‘লিক’। তার জেরে গত বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ রাজ্য সরকারের সংস্থা দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডের (ডিপিএল) অষ্টম ইউনিট। বিরোধীদের অভিযোগ, পাথর মেশানো কয়লা ব্যবহারের জন্যই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কর্তৃপক্ষ।
ডিপিএলের আটটি ইউনিটের মধ্যে বর্তমানে ৩০০ মেগাওয়াটের সপ্তম এবং ২৫০ মেগাওয়াটের অষ্টম ইউনিট চালু আছে। ডিপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, বয়লারের টিউব লিক হয়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে অষ্টম ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ। ডিপিএলের জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্র বলেন, “মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত ইউনিট চালুরচেষ্টা চলছে।”
সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়লার অভাবে বেশ কিছুদিন ধরেই সপ্তম ও অষ্টম, দু’টি ইউনিটই সব সময় একসঙ্গে পূর্ণ উৎপাদন ক্ষমতায় চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে উৎপাদিত বিদ্যুতে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের প্রয়োজনীয় চাহিদা মিটে যাচ্ছে বলে দাবি। এ দিকে, গরমের সময় শিল্পাঞ্চলে বিদ্যুতের চাহিদা থাকে প্রায় তিনশো মেগাওয়াট। অষ্টম ইউনিট বন্ধ থাকলেও বর্তমানে চালু আছে সপ্তম ইউনিট। ফলে, উৎপাদনহীন হয়নি ডিপিএল।
তবে এই পরিস্থিতির জন্য সরব হয়েছে বিরোধীরা। অভিযোগ, পাথর মেশানো কয়লা ব্যবহারের জন্যই বয়লারের টিউব ‘লিক’ হয়েছে। ওই টিউব দিয়েই কয়লা পৌঁছয় বয়লারে। সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, “ডিপিএলের কয়লায় বিপুল পরিমাণ পাথর, মাটি রয়েছে বলে শুনছি। তার জেরেই দুর্ঘটনা।”
অথচ, ডিপিএলের হাতে রয়েছে বাঁকুড়ার বড়জোড়ায় ট্রান্স দামোদর কয়লা খনি। কিন্তু নানা কারণে সেই খনি পুরোদমে চালু করতে পারেনি সংস্থা। তাই রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলক সংস্থা ইসিএল-সহ অন্য সংস্থার কাছ থেকে কয়লা কিনতে হয় ডিপিএলকে। আইএনটিইউসি নেতা উমাপদ দাসেরও অভিযোগ, “নিজেদের হাতে থাকা খনি ঠিক ভাবে চালু করতে না পারার জন্যই কয়লা নিয়ে সমস্যা হচ্ছে বার বার।” বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “কেন কয়লার পরিবর্তে বোল্ডার, পাথর এনে ঢালা হচ্ছে, তার তদন্ত হওয়া দরকার।”
যদিও, ডিপিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কয়েকটি রেকে পাথর মেশানো কয়লা এসেছিল। সরবরাহকারী সংস্থাকে ইতিমধ্যেই তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারিগরি সমস্যার জন্য বন্ধ রয়েছে অষ্টম ইউনিট।