Kazi Nazrul University

শিক্ষকদের ই-হাজিরার ‘অনুরোধ’, বিতর্ক কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে

বিজ্ঞপ্তিতে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শিক্ষক, অশিক্ষক, আধিকারিক এবং শিক্ষকদের নিজস্ব পোর্টালে নিয়মিত ভাবে অনলাইনে ই-হাজিরা দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:০৩
Share:

কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত।

কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মচারী, আধিকারিকদের নিয়মিত ভাবে ই-হাজিরা দিতে ‘অনুরোধ’ করা হয়েছে। এই মর্মে গত ২১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার চন্দন কোনারের সই করা একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ। যদিও, উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীর দাবি, এই অনুরোধের মধ্যে আইনি কোনও সমস্যা নেই।

Advertisement

বিজ্ঞপ্তিতে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শিক্ষক, অশিক্ষক, আধিকারিক এবং শিক্ষকদের নিজস্ব পোর্টালে নিয়মিত ভাবে অনলাইনে ই-হাজিরা দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। এ-ও জানানো হয়েছে, এই ‘রেকর্ড’ থাকলে, প্রয়োজনে তা রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরে পাঠানো হবে।

এই বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার চন্দন কোনারের কাছে দাবিপত্র জমা দিয়েছে তৃণমূলের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-র কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। সংগঠনের শাখা সভাপতি তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সজল ভট্টাচার্যের দাবি, “রাজ্যের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন নিয়ম নেই। সর্বত্র অশিক্ষক কর্মচারী এবং আধিকারিকদের অনলাইনে হাজিরা দিতে হয়। কিন্তু শিক্ষকদের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়।” সজল সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে বলেন, “ই-হাজিরার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই রেজিস্ট্রারকে দাবিপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। আমরা দু’দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিলাম। শুক্রবার দু’দিন পেরিয়ে গিয়েছে। আজ, সোমবার আমরা সাংগঠনিক ভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ করব।”

Advertisement

যদিও, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী ওয়েবকুপা-র দাবির সঙ্গে সহমত নন। তাঁর দাবি, রাজ্য সরকার বিশ্ববিদ্যালয়টি চালুর পরে এখানে বিভিন্ন পরিকাঠামোগত কাজের বিষয়ে ‘পাইলট প্রজেক্ট’ নিয়েছিল। তাতে সাফল্য মিলেছে। আইসিটি (ইনফরমেশন কমিউনিকেশন টেকনোলজি অ্যাপ্লিকেশন) তার একটি উদাহরণ। তাঁর দাবি, “রাজ্যে একমাত্র এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সব কিছু অনলাইনে হয়। কারণ, একমাত্র এই বিশ্ববিদ্যালয়েই আইসিটি পদ্ধতি চালু আছে।” তাঁর প্রশ্ন, শিক্ষকেরা ছুটির দরখাস্ত অনলাইনে করেন। তা হলে ই-হাজিরা দেওয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধা কোথায়। যদিও, শিক্ষকদের একাংশের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি অশিক্ষক কর্মচারী বা আধিকারিকদের মতো সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নয়। অনেক সময়েই গবেষণার কাজে অথবা কোনও বিষয় নিয়ে উপাচার্য বা রেজিস্ট্রারের সঙ্গে আলোচনার জন্য অতিরিক্ত সময় দিতে হয়। শনি, রবিবারও বৈঠক ডাকা হয়। গত রবিবারই ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছিল। ফলে, শিক্ষকদের জন্য ই-হাজিরা দেওয়ার ‘অনুরোধটি’ ভিত্তিহীন।

তবে উপাচার্য বলেন, “ছুটির দরখাস্থ অনলাইনে। কিন্তু দৈনিক হাজিরার ক্ষেত্রে তা না হওয়ায় রেজিস্ট্রারের ক্ষেত্রে মাসের শেষে উপস্থিতির হিসাব মেলাতে অতিরিক্ত সময় খরচ করতে হচ্ছে। এটা কাম্য নয়। ‘আইসিটি’ পদ্ধতির বিশ্ববিদ্যালয়ে সবটাই অনলাইনে হওয়া প্রয়োজন। বেশির ভাগ শিক্ষক অনলাইনেই হাজিরা দিচ্ছেন। কিছু শিক্ষক এর বিরোধিতা করছেন।”

কিন্তু এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আইনি ভাবে কী সংস্থান রয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষকদের একাংশ। উপাচার্যের অবশ্য দাবি, “স্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও আইনি বাধা নেই।” পুরো বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়ার জন্য যোগাযোগ করা হলেও রেজিস্ট্রার চন্দন কোনার ফোন ধরেননি। জবাব দেননি মেসেজেরও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement