বিতর্কই সঙ্গী প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলরের

তোলাবাজি, দোকান, মিড-ডে মিল বন্ধ করা থেকে এলাকার বাসিন্দাকে রাজ্য ছাড়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৯ ০০:০১
Share:

কাউন্সিলর থাকার সময়েও বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। প্রাক্তন হওয়ার পরেও বিতর্ক পিছু ছাড়েনি।

Advertisement

তোলাবাজি, দোকান, মিড-ডে মিল বন্ধ করা থেকে এলাকার বাসিন্দাকে রাজ্য ছাড়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এলাকায় গুন্ডামি করার অভিযোগে কাউন্সিলর থাকার সময় জেল-হাজতও হয়েছে। এমনকি, লোকসভা ভোটেও নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে বর্ধমান পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর সৈয়দ মহম্মদ সেলিমকে ‘গৃহবন্দি’ করে রেখেছিল পুলিশ।

ওই নেতার অবশ্য দাবি, “পরপর দু’বার সিপিএমের বোমা-গুলির সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ করেছিলাম। তারপর থেকেই লোকজন ভাবতে শুরু করে আমি বিশাল মস্তান! আদতে আমি সে সব কিছুই নই। সমাজসেবা করার লক্ষ্য নিয়েই রাজনীতি করেছি।’’

Advertisement

২০১৩ সালে পুরভোটে জিতে কাউন্সিলর হন সেলিম। বর্ধমান শহরের জল সরবরাহের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, পুরবোর্ড গঠনের প্রথম দিন থেকেই দলের ‘ক্ষমতাশালী’ গোষ্ঠীর বিরোধিতা শুরু করেন তিনি। এলাকায় প্রভাব বাড়ে, বাড়ে অভিযোগের তালিকাও।

পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের জুলাইয়ে পারিবারিকি বিবাদ মেটানোর নামে সালিশি ডেকে প্রেমশঙ্কর ঠাকুরের দোকান বন্ধ করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। ওই বছরের অগস্টে বর্ধমান রেলওয়ে বালিকা বিদ্যালয়ে ‘পছন্দের’ লোক ঢোকানোর জন্যে চাপ দিয়ে মিড-ডে মিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। মাসখানের পরে মেটে ঝামেলা। ২০১৫ সালের ২০ ডিসেম্বর কালনা গেটে সিপিএমের উপর বোমা-গুলি নিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার হন সৈয়দ মহম্মদ সেলিম। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে এক পশু চিকিৎসকের কাছে ৫০ হাজার টাকা তোলা চাওয়া ও সেপ্টেম্বরে এক বৃদ্ধ দম্পতির উপর হামলা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে। নভেম্বরে অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী কিশোরপ্রসাদ পাসোয়ানের কাছে বাড়ির নকশা তৈরির নামে ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেই টাকা ফেরত চাইলে সোমবার কিশোরবাবুকে দলীয় দফতরে ডেকে মানসিক অত্যাচার এমনকি রাজ্য ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেই চাপ সহ্য করতে না পেরেই কিশোরবাবু মারা যান বলে পরিজনদের দাবি। বুধবার কিশোরবাবুর স্ত্রী পুতুলদেবী বর্ধমান থানায় প্রাক্তন কাউন্সিলরের নামে অভিযোগ জানান।

প্রাক্তন কাউন্সিলরের দাবি, “আমাদের দলের একটি গোষ্ঠীর মদতে বিজেপি আমাকে বদনাম করছে। আমি দলের ওই গোষ্ঠীর কাছে মাথা নত করছি না, অন্যায়ের প্রতিবাদ করছি, সেটাই রাগের কারণ।’’ তৃণমূল নেতা খোকন দাস বলেন, “কে কী করছে মানুষ দেখছেন। দলও দেখছে।’’

বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দীর দাবি, “অত্যাচার-তোলাবাজির সীমা পার করে ফেলেছন ওই প্রাক্তন কাউন্সিলর। সে জন্যেই মানুষ মুখ খুলেছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement