দলের কর্মীদের একাংশের দাবি ছিল, তরুণ কোনও নেতাকে বসানো হোক পদে। একাংশ আবার চেয়েছিলেন কোনও শ্রমিক নেতাকে। সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক পদের জন্য গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়ের নাম বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিরোধিতা এসেছিল দলের ভিতর থেকেই। কিন্তু জেলা কমিটির বড় অংশ তাঁর নামই চূড়ান্ত করেন। সব ঠিক থাকলে আজ, বুধবার রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক শেষে তাঁর নামই ঘোষণা হবে বলে জানা গিয়েছে।
গৌরাঙ্গবাবুর নাম প্রস্তাব হওয়ার পরে জেলা সিপিএমের একাংশের দাবি, দলের যুবকর্মীদের মধ্যে তাঁর তেমন প্রভাব নেই। খনি-শ্রমিক সংগঠনের নেতা হিসেবে পাণ্ডবেশ্বর, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, কাজোড়ায় কাজ করেছেন তিনি। কিন্তু এর বাইরে তাঁর বিশেষ কর্মকাণ্ড নেই। তা ছাড়া আসানসোল ও দুর্গাপুরে ইস্পাত-শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের মধ্যে তাঁর খুব একটা পরিচিতি নেই। তাই পরিচিত কোনও শ্রমিক নেতার পক্ষে সওয়াল করেছিল দলের একাংশ। যদিও জেলা নেতাদের অনেকের মতে, গৌরাঙ্গবাবুর লড়াকু নেতা হিসেবে পরিচিতি বর্তমান পরিস্থিতিতে দলের কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে কাজে আসবে।
সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বর্ধমানে বৈঠকে পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির দুই সদস্য গৌরাঙ্গবাবুকে বেছে নেওয়া নিয়ে আপত্তি জানান। যদিও এমন আপত্তির কথা প্রকাশ্যে উড়িয়ে দিয়েছেন সিপিএম নেতারা। দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের দলে সহমতের ভিত্তিতেই সব সিদ্ধান্ত হয়। জেলা সম্পাদক বাছাইতেও তাই হয়েছে।’’ রানিগঞ্জের সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্তেরও বক্তব্য, ‘‘নতুন জেলা নিয়ে সব সিদ্ধান্ত সহমতের ভিত্তিতে হয়েছে।’’ দলের দুর্গাপুরের নেতা বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জেলা সংগঠন ভাগের ফলে শিল্পাঞ্চলে দলের বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণ আরও ভাল ভাবে করা যাবে। নেতৃত্বের সঙ্গে কর্মীদের যোগাযোগ আরও ভাল হবে।’’ জেলা নেতাদের অনেকেই এই আশা করছেন।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গবাবু ২০১১ সালে পাণ্ডবেশ্বরে জিতে বিধায়ক হন। তিনি আদতে বার্নপুরের বাসিন্দা। এক সময়ে ইস্কোর ঠিকা শ্রমিকও ছিলেন। দীর্ঘদিন কর্ণাটকে জাহাজ কারখানায় কাজ করেছেন। দলের কিছু নেতা-কর্মী আবার দাবি করেছেন, গৌরাঙ্গবাবু জেলার দুই মূল শহর আসানসোল বা দুর্গাপুরে থাকেন না, তাই কাজকর্মে সমস্যা হতে পারে। গৌরাঙ্গবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা সবাই এক হয়ে কাজ করি। কোথাও কোনও সমস্যা হবে না।’’