প্রতীকী ছবি।
আজ, বৃহস্পতিবার থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে চাল দেওয়ার জন্য এফসিআই থেকে চাল তুলবেন ডিস্ট্রিবিউটরেরা। সে চাল পৌঁছে যাবে রেশন দোকানে। তবে এখনও পর্যন্ত লিখিত নির্দেশিকা না থাকায় পরিযায়ীদের হাতে কী ভাবে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছবে তার পদ্ধতি ঠিক করতে পারেনি জেলা প্রশাসন।
জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতীর অবশ্য দাবি, “আমাদের কাছে পরিযায়ীদের নিয়ে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। কাদের কার্ড আছে, কাদের নেই তা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রয়োজন হলে ফোন করে প্রাপকদের খাদ্যসামগ্রী পৌঁছনোর কথা জানানো হবে।’’ জেলা প্রশাসনের আশা, এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পরিযায়ীদের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া যাবে।
যে সব পরিযায়ী রেশন-ব্যবস্থার বাইরে রয়েছেন, ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পে তাঁদের হাতেও মে ও জুন মাসের খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। প্রাপকেরা মাথা পিছু মাসে পাঁচ কেজি চাল ও পরিবার পিছু এক কেজি ছোলা পাবেন। নির্দেশ অনুযায়ী, পূর্ব বর্ধমানের জন্য ১,৬৭৩ টন চাল ও ৮৪ টন ছোলা অনুমোদন করেছে এফসিআই। ৬ জুনের মধ্যে ডিস্ট্রিবিউটরদের আলমগঞ্জ থেকে চাল তোলার জন্য বলা হয়েছে। বুধবার সেই মতো চিঠিও পাঠিয়েছেন জেলা খাদ্য দফতরের উপ-অধিকর্তা আবির বালি। কেন্দ্রের চিঠিতেই পরিষ্কার করে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে’র কার্ড নেই, আবার রাজ্য সরকারের রেশন ব্যবস্থাতেও নাম নেই, এমন পরিযায়ীরাই ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পে চাল ও ছোলা পাবেন।
জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে ‘জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্প’-এ নাম রয়েছে আনুমানিক ৩৩ লক্ষ উপভোক্তার। তার মধ্যে ১০ শতাংশ পরিবারের কার্ড নেই ধরে চালের হিসেব করেছে এফসিআই। আর পাঁচ শতাংশ পরিবারকে ছোলা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
তা হলে কোন-কোন পরিযায়ী ওই প্রকল্পে খাদ্যসামগ্রী পাবেন? বুধবার বিকেলে খাদ্য দফতরের একাধিক আধিকারিকের দাবি, “পরিযায়ীদের নিয়ে নির্দিষ্ট তথ্য প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে চাওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও তা আসেনি। ফলে, কী ভাবে খাদ্যসামগ্রী বিলি হবে, সিদ্ধান্ত হয়নি। আবার লিখিত নির্দেশিকা আসেনি বলেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, দু’-এক দিনের মধ্যে সমস্যা কেটে যাবে।’’
আবির বালির দাবি, “প্রতিটি ব্লক প্রাথমিক ভাবে পরিযায়ীদের খাদ্যসামগ্রী পাওয়া নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করছে। সেই রিপোর্টেই জানা যাবে, কোন কোন পরিযায়ী খাদ্যসামগ্রী পেতে পারেন।’’ জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ‘লকডাউন’-এর পর থেকে ভিন্ রাজ্য থেকে ৫০ হাজারের মতো বাসিন্দা এ জেলায় এসেছেন। তার মধ্যে তিরিশ হাজারের বেশি পরিযায়ী। যাঁদের মধ্যে ৯০ শতাংশ মানুষেরই রেশন কার্ড আছে বলে একটি তথ্য পেয়েছে জেলা প্রশাসন। সে তথ্য ফের খতিয়ে দেখে বিডিওদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক।