এই আবাসনের সামনের ব্যারিকেড ভাঙা নিয়েই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র
করোনা-পরিস্থিতিতে বিধি মানা নিয়ে ফের কাটোয়ায় সামনে এল তৃণমূলের ‘অন্তর্দ্বন্দ্ব’। কাটোয়া পুরসভার প্রশাসক তথা এলাকার তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার দলেরই এক বিদায়ী কাউন্সিলর তথা করোনার ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটরের বিরুদ্ধে গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় স্বাস্থ্য-বিধি না মানার অভিযোগ তোলেন। শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বিদায়ী কাউন্সিলর শ্যামল ঠাকুরের পাল্টা অভিযোগ, করোনা-পরিস্থিতি সামাল দিতে গাফিলতি করছে পুরসভাই।
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, দিন পাঁচেক আগেই কাটোয়ার সার্কাস ময়দান-হাসপাতাল রোডের একটি আবাসনে করোনা-আক্রান্তের সন্ধান মেলে। পুলিশ ওই আবাসনের গেট গণ্ডিবদ্ধ করে দেয়। কিন্তু এর পরেই শ্যামলবাবু যাওয়া-আসার সুবিধার জন্য বাঁশের ব্যারিকেড ভেঙে দেন বলে অভিযোগ ওঠে। পুরসভার প্রশাসক রবীন্দ্রনাথবাবুর অভিযোগ, ‘‘ওই আবাসনে দু’জন করোনা-আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। তাই আবাসনটি গণ্ডিবদ্ধ করে পুলিশ বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ‘কোভিড কো-অর্ডিনেটর’ শ্যামল ঠাকুর ব্যারিকেড বারবারই ভেঙে দিচ্ছেন। কোনও কথা শুনছেন না। তিনি করোনা দমন না করে ছড়াতে সহযোগিতা করছেন।’’
শ্যামলবাবুর পাল্টা দাবি, ‘‘পুরসভার প্রশাসক আমার নামে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছেন। কে বাঁশ ভেঙে দিচ্ছে তা আমি কী করে বলব? আমি তো পাহারাদার নই। বরং বারবার বলা সত্ত্বেও আবাসন এখনও পুরসভা জীবাণুমুক্ত করেনি।’’ কাটোয়া শহর তৃণমূল সভাপতি তথা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অমর রাম দাবি করেন, ‘‘করোনা ছড়ানো নিয়ে শ্যামল ঠাকুরকে সরাসরি দায়ী করা ঠিক নয়। আগে তাঁকে ডেকে জিজ্ঞাসা করা উচিত ছিল।’’
কাটোয়ায় তৃণমূলের ‘দ্বন্দ্ব’ নানা সময়েই প্রকাশ্যে এসেছে। পুরসভা পরিচালনা নিয়ে প্রায়ই গোলমাল বেধেছে। করোনা আটকানো নিয়েও দ্বন্দ্ব দেখা দেওয়ায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। সিপিএম নেতা অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে সাধারণ মানুষ ভুগছেন। বিধায়ক নিজের দলের লোককে সামলান। গণ্ডিবদ্ধ এলাকা ভাঙার জন্য পুলিশ ব্যবস্থা নিক।’’ বিজেপির পূর্ব বর্ধমান জেলা (কাটোয়া) সহ-সভাপতি অনিল দত্তের অভিযোগ, ‘‘করোনা প্রতিরোধের চিন্তা ওঁদের নেই। কার প্রাধান্য বজায় থাকবে, সেই প্রতিযোগিতা চলছে এখনও।’’