বিজেপির কর্মী সম্মেলন পশ্চিম বর্ধমানের কুলটিতে। বুধবার সেখান থেকে ‘দুর্নীতির’ প্রশ্নে তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান তথা কুলটির প্রাক্তন বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়কে বিঁধলেন বিজেপির আসানসোল পুরভোটের নির্বাচনী কমিটির আহ্বায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে একই প্রশ্নে জিতেন্দ্রকেও বিঁধেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে আসানসোল পুর-এলাকায় শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি জোর তরজা।
বুধবার কুলটির ১০২ নম্বর ওয়ার্ডে আয়োজিত ওই কর্মী সম্মেলন থেকে জিতেন্দ্র বলেন, “সাবেক কুলটি পুরসভার আমলে এলাকার কোনও উন্নয়ন করেননি তৎকালীন পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। উল্টে, নানা বিষয়ে দুর্নীতি করেছেন।”
২০১৫-য় নব-কলেবরে আসানসোল পুরসভার আত্মপ্রকাশের পরে, মেয়র হয়েছিলেন জিতেন্দ্র। তৎকালীন মেয়রের দাবি, সে সময় উজ্জ্বল তাঁর কাছে অনুরোধ করেন, সাবেক কুলটি পুরসভায় ঠিকাদারদের প্রায় ১৬ কোটি টাকা বিল পাওনা আছে। তা মেটাতে হবে। জিতেন্দ্রর দাবি, “ফাইলে দেখি, কোথায়, কী কাজ করানো হয়েছে, তার বিবরণ নেই। শুধু কাজের ওয়ার্ক অর্ডার ও ঠিকাদারদের বকেয়া বিল রয়েছে।” উজ্জ্বলের দাবি, “বিল বকেয়া থাকতেই পারে। এটা কোনও অস্বাভাবিক বিষয় নয়। তবে কাজ না করে বিল করা হয়েছে, এমন ধারণা ঠিক নয়।” জিতেন্দ্র আরও দাবি করেন, কুলটি জল-প্রকল্পের জন্য পুর-নাগরিকদের কাছ থেকে আদায় করা করের টাকা থেকে প্রায় ১৬ কোটি টাকার পাইপ কেনা হয়েছে। কিন্তু জল-প্রকল্পটি কোথায় হবে, কতগুলি জলাধার হবে, কোন পথে পাইপলাইন যাবে, কোন সংস্থাকে দিয়ে প্রকল্পটি তৈরি করা হবে, সে বিষয়ে কিছুই ঠিক ছিল না। জিতেন্দ্র দাবি, “এ থেকেই স্পষ্ট কাটমানি নেওয়া হয়েছিল।” যদিও উজ্জ্বলের প্রতিক্রিয়া, “জিতেন্দ্র আসলে যা আমার সম্পর্কে বলছেন, সেগুলি ওঁর নিজের সম্পর্কে খাটে। জল-প্রকল্পের জন্য একটি কমিটি ছিল। পাইপ কেনার সম্মতি ওই কমিটিই দিয়েছিল।” পাশাপাশি, কুলটির ২৮টি ওয়ার্ডে উন্নয়নমূলক কাজেও সে সময় উজ্জ্বল বাধা দিতেন বলে জিতেন্দ্রর অভিযোগ।
পাশাপাশি, তোপ দেগেছেন বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দিলীপ দে’-ও। তাঁর কথায়, “জিতেন্দ্র ভুল কিছু বলেননি। তৃণমূল চলে কাটমানির টাকায়।” যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিধান উপাধ্যায় যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সঙ্গে তাঁর ‘হুঁশিয়ারি’: “জিতেন্দ্রর যাবতীয় দুর্নীতি আমরা জনসমক্ষে ফাঁস করব। সেটা শুধু সময়ের অপেক্ষা।”