Babul Supriyo

জমি ‘দ্বন্দ্বে’ সাংসদ, মেয়র

বাবুলের অভিযোগ, ‘‘গত ১৩ অগস্ট আমি মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি প্রকল্পের পুরো বিবরণ দিয়ে প্রয়োজনীয় জমি চেয়ে আবেদন করেছি। কিন্তু তিনি জমি দিতে অস্বীকার করেছেন। ফলে, প্রকল্পটি ঝুলে রয়েছে।’’ সাংসদের জমি চেয়ে আবেদনের চিঠি পেয়েছেন বলে জানান মেয়র জিতেন্দ্রবাবু। কিন্তু তাঁদের পক্ষে যে জমি দেওয়া সম্ভব নয়, তা-ও জানান তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২০ ০০:২৪
Share:

বাবুল সুপ্রিয় ও জিতেন্দ্র তিওয়ারি। ফাইল চিত্র।

ফের চাপান-উতোর আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ও আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির মধ্যে। এ বার বিতর্কের কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের জন্য জমি। পরিবেশ সংক্রান্ত প্রকল্পের জন্য পুরসভার কাছে জমি চেয়েও মেলেনি বলে সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে অভিযোগ করেছেন সাংসদ। যদিও মেয়রের দাবি, পুরসভার হাতে প্রয়োজনীয় জমি নেই।

Advertisement

কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন দফতরের প্রতিমন্ত্রী বাবুল জানান, আসানসোলের পরিবেশ রক্ষা এবং দূষণ ও ভূমিক্ষয় রোধের জন্য তাঁর মন্ত্রক শহরে বনাঞ্চল তৈরিতে পদক্ষেপ করেছে। ঠিক হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের ‘নগর ও বন যোজনা প্রকল্পে’র অধীনে কাজটি করা হবে। প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী, তা রূপায়ণের জন্য অর্থ বরাদ্দ করবে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রয়োজনীয় জমি রাজ্য সরকার অথবা সরকারের অধীনস্থ স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা করবে।

সাংসদ জানান, আসানসোলের এই প্রকল্পের জন্য প্রায় ৫০ হেক্টর জমি দরকার। এ জন্য বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় দু’কোটি টাকা অর্থ অনুমোদনও করেছে বলে দাবি। বাবুলের অভিযোগ, ‘‘গত ১৩ অগস্ট আমি মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি প্রকল্পের পুরো বিবরণ দিয়ে প্রয়োজনীয় জমি চেয়ে আবেদন করেছি। কিন্তু তিনি জমি দিতে অস্বীকার করেছেন। ফলে, প্রকল্পটি ঝুলে রয়েছে।’’ সাংসদের জমি চেয়ে আবেদনের চিঠি পেয়েছেন বলে জানান মেয়র জিতেন্দ্রবাবু। কিন্তু তাঁদের পক্ষে যে জমি দেওয়া সম্ভব নয়, তা-ও জানান তিনি।

Advertisement

এ দিকে, জমি-জটিলতার পরেই বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী ও সাংসদের মধ্যে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। বাবুলের অভিযোগ, ‘‘আমার সাংসদ এলাকার বাসিন্দাদের উপকারের জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্প রূপায়ণের লক্ষ্যে জমি চাওয়া হলেও বাধা দিচ্ছেন মেয়র।’’ জিতেন্দ্রবাবুর অবশ্য দাবি, ‘‘বাধা দেওয়ার অভিযোগ অসত্য। এখানে পুরসভা তথা রাজ্য সরকারের খুবই অল্প জমি আছে। যেটুকু রয়েছে, তা বিভিন্ন জনহিতকর উন্নয়নের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে এই শিল্পাঞ্চলে রেল, সেল ও ইসিএল, এই তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার প্রচুর অব্যবহৃত জমি রয়েছে। সাংসদকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, ওই তিন সংস্থার সঙ্গে কথা বলে তাদের জমিতে এই প্রকল্প গড়ে তুলুন।’’

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহরের পরিবেশকর্মীদের একাংশের মতে, আসানসোলে ভূগর্ভস্থ জলস্তর, পরিবেশের ভারসাম্য, অরণ্য সম্পদ নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। খনি থাকায় এলাকা এমনিতেই ধসপ্রবণ। নিয়মিত ভূমিক্ষয়ও হচ্ছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকবছরে কাঁখোয়া, কাল্লা-সহ আসানসোলের কিছু এলাকায় ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমতে দেখা যাচ্ছে। নির্দিষ্ট কতটা জলস্তর কমেছে, তা পরিমাপ করে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুরসভার সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার সুকোমল মণ্ডল। পরিবেশবিদদের দাবি, আসানসোল শহরের স্বার্থে ‘রাজনীতি’কে পাশে সরিয়ে রেখে এমন প্রকল্প প্রয়োজনীয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement