কাদায় ভরা রাস্তা। পাণ্ডবেশ্বরে। —নিজস্ব চিত্র।
৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের পাণ্ডবেশ্বরের ফুলবাগান মোড় থেকে একটি সংযোগকারী রাস্তা দুর্গাপুর ও উখড়ার দিকে গিয়েছে। এই রাস্তার পোস্ট অফিস থেকে পাণ্ডবেশ্বর স্টেশন লাগোয়া এলাকা পর্যন্ত বেহাল। একই অবস্থা জামুড়িয়ার চুরুলিয়া থেকে অজয় নদ যাওয়ার বাইপাসের। স্থানীয়দের অভিযোগ, একাধিক বার বিভিন্ন দফতরে রাস্তা দু’টি সংস্কারের আবেদন জানিয়েও প্রতিকার হয়নি। সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছে
পূর্ত দফতর।
পাণ্ডবেশ্বর ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সংযোগকারী রাস্তাটি পূর্ত দফতর ও রেলের অধীনে। বেহাল অংশের বেশির ভাগটাই রেলের অধীনে। পাণ্ডবেশ্বর চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক সত্যেন্দ্রপ্রসাদ বর্মা জানান, পাণ্ডবেশ্বর বাজারে সোম, বুধ ও শুক্রবার— তিন দিন হাট বসে। ট্রেনযাত্রী, সরকারি কর্মী থেকে পড়ুয়ারা এই রাস্তাটি ব্যবহার করেন। এ ছাড়া, এই পথে তিন-চারটি পুজো পড়ে। কিন্তু এটি সংস্কার না হওয়ায়, বৃষ্টিতে কাদায় ভরে যায়। অন্য সময়ে ধুলো ওড়ে। অভিযোগ, একাধিক বার সংশ্লিষ্ট সব দফতরে সংস্কারের আর্জি জানানো হলেও, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বৈদ্যনাথপুর পঞ্চায়েতের প্রধান অক্ষয় বাউড়ি জানান, রাস্তা বেহালের জন্য নর্দমাও সংস্কার করা যাচ্ছে না। বিডিও (পাণ্ডবেশ্বর) মহাশ্বেতা বিশ্বাস বলেন, “পূর্ত দফতর ও রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। রেল প্রয়োজনীয় অনুমতি দিয়েছে। পূর্ত দফতর কাজ করবে।” পূর্ত দফতরের আসানসোল ডিভিশিনের এক কর্তা জানান, শুধু ‘নো অবজেকশন’ শংসাপত্র দিলে হবে না, রেলের জায়গার অংশ সংস্কারের জন্য টাকা রেলকেই দিতে হবে। কত টাকা লাগবে, শীঘ্রই রেলকে জানানো হবে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, “পূর্ত দফতরকে সব রকম সাহায্য করা হবে।”
এ দিকে, রাজ্য পূর্ত দফতর সূত্রে জানা যায়, জামুড়িয়ার চুরুলিয়া থেকে চিচুরবিল গ্রাম হয়ে অজয় নদের তালড্যাংরা ঘাট যাওয়ার একটি রাস্তা রয়েছে। খোলামুখ খনির কয়লা পরিবহণের জন্য একটি বেসরকারি সংস্থা ওই রাস্তার চুরুলিয়ার মুচিপাড়া থেকে চিচুরবিল গ্রাম পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার অংশ অধিগ্রহণ করে। তবে রাস্তার পাশে খনি চালু করার আগে সংস্থাটি মুচিপাড়া থেকে অজয় পর্যন্ত একটি বাইপাস তৈরি করে।
গোপী পাত্র, রাহুল মণ্ডলেরা জানান, অতীতে খনি কর্তৃপক্ষ বাইপাস সংস্কার করলেও, কয়েক বছর ধরে আর করছেন না। তা ছাড়া বালি পরিবহণের জেরে বাইপাস ভেঙেচুরে গিয়েছে। চুরুলিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান প্রদীপ মুখোপাধ্যায় জানান, বাইপাস সংস্কারের জন্য পূর্ত দফতরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, বালির ট্রাক, ডাম্পার যাতে বিকল্প রাস্তা দিয়ে যায়, সে দিকেও নজর দেওয়া উচিত।
পূর্ত দফতরের আসানসোল শাখার এক আধিকারিক জানান, বাইপাসটি সংস্কারের করার জন্য ইসিএলের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। চেষ্টা করেও ইসিএল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।