এমনই হাল জামুড়িয়া রেল স্টেশনের। নিজস্ব চিত্র
প্রশাসনের তরফে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, জামুড়িয়া রেল স্টেশনকে মডেল রেল স্টেশন হিসেবে গড়ে তোলা হবে। কিন্তু সেই কথা প্রশাসন রাখেনি বলে অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের।
অণ্ডাল-যশিডি রেলপথের মাঝে পড়ে জামুড়িয়া রেল স্টেশন। এর উপর দিয়ে একমাত্র অণ্ডাল-বৈদ্যনাথধাম লোকাল ট্রেন চলাচল করত। রেল সূত্রেই জানা গিয়েছে, ‘অলাভজনক’— এই কারণ দেখিয়ে ১৯৯৬ সালের জুন মাসে ওই ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। তারপরে ২০০৯ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই রেল স্টেশনটিকে মডেল স্টেশন তৈরি করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। ২০১০-২০১১ আর্থিকবর্ষে ফের ওই ট্রেন চলাচল শুরু হয়। কিন্তু সাত বছর পরেও এই স্টেশনের পরিষেবার কোনও উন্নতি হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার বাসিন্দারা।
এই স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম অনেক নিচু। যাত্রী পরিষেবা বলতে স্টেশনে কয়েকজন বসার মতো শুধু মাথার উপর স্বল্প আচ্ছাদিত জায়গা। তাও বিদ্যুৎহীন। জল নেই। স্টেশন চত্বর আগাছায় ভর্তি। রেল সূত্রে খবর, অণ্ডাল থেকে সকাল সাতটা ১৫মিনিট নাগাদ ট্রেন আসে জামুড়িয়ায়। আবার বিকেল পাঁচটা পাঁচ মিনিট নাগাদ ওই ট্রেনটিই যশিডি থেকে ফিরে আসে। তালতোড়ের বাসিন্দা কাজল মাজি, জামুড়িয়া বাজারের অশোক সিংহ, দেবেন্দ্র মাহাতোদের কথায়, ‘‘সারাদিন টিকিট কাউন্টার খোলা থাকে না। ট্রেন আসার আধঘণ্টা আগে একজন ঝোলায় টিকিট নিয়ে আসেন। টিকিট বিক্রি করে আবার তিনি ফিরে যান। প্ল্যাটফর্ম নিচু হওয়ায় খুব সমস্যা হয় বয়স্ক যাত্রীরাদের।’’
জামুড়িয়ার সিপিএম নেতা মনোজ দত্ত বলেন, ‘‘এই লাইনে ট্রেন চালানোর দাবিতে ২০০৮ সালে তৎকালীন রেলস্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান বাসুদেব আচারিয়া রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের কাছে প্রস্তাব রেখেছিলেন। তারপরে ২০০৯ সালে ইকরা থেকে জামুড়িয়া পর্যন্ত এই দাবিতে পদযাত্রা করা হয়েছিল।’’ তিনি জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চেষ্টায় ট্রেন চলাচল শুরু হলেও গুরুত্বপূর্ণ এই শহরে স্টেশনের কোনও উন্নতি হয়নি। তাঁর অভিযোগ, রেল দফতর জামুড়িয়ায় সংরক্ষণকেন্দ্র চালু করার নামে জামুড়িয়া গ্রামে ঘর দেখে গেলেও কাজ আর এগোয়নি।
জামুড়িয়া বণিক সংগঠনের সম্পাদক অজয় খেতান ও সিপিএম নেতা মনোজ দত্তের দাবি, ‘‘আমরা চাই, এই ট্রেন ছাড়াও চিত্তরঞ্জন থেকে (ভায়া জামুড়িয়া) অণ্ডাল ও কলকাতা ট্রেন চালানো হোক। তাতে বহু মানুষ উপকৃত হবেন। সেই সঙ্গে এই রেলপথও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।’’ তাঁদের অভিযোগ, রেলের বিভিন্ন দফতরে এই দাবিতে স্মারলিপি দিলেও কাজ হয়নি। পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমার্সিয়াল ম্যানেজার রাহুল রঞ্জন বলেন, ‘‘এই স্টেশন নিয়ে এই মুহূর্তে কোনও পরিকল্পনা নেই।’’