বেদখল: ডিএসপি টাউনশিপের সেই অফিস। নিজস্ব চিত্র
কারখানা বাঁচানোর দাবি জানাতে দিল্লি গিয়েছেন সিটু অনুমোদিত ‘হিন্দুস্তান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’-এর সদস্য-সমর্থকেরা। সেই সুযোগে তাদের কার্যালয় দখল করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের ১ নম্বর বিদ্যাসাগর অ্যাভিনিউয়ে ওই কার্যালয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে শাসকদলের পতাকা। যদিও তৃণমূল নেতারা কার্যালয় দখলের কথা অস্বীকার করেছেন।
কেন্দ্রের অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট (এএসপি) বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ‘হিন্দুস্থান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’ বছরখানেক ধরে আন্দোলন করছে। এ বার ‘এএসপি ও ডিএসপি বাঁচাও’ দাবি তুলে দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়েছে তারা। দুর্গাপুর থেকে সংগঠনের অধিকাংশ নেতা, কর্মী, সমর্থক দিল্লি রওনা দিয়েছেন। বিদ্যাসাগর অ্যাভিনিউয়ে ডিএসপি-র একটি আবাসনে সংগঠনের ওই কার্যালয়ে সোমবার প্রবীণ কেয়ারটেকার ছাড়া কেউ ছিলেন না।
সিটুর অভিযোগ, এ দিন দুপুরে কার্যালয়ে জোর করে ঢুকে পড়েন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। সিটুর পতাকা খুলে ফেলে দিয়ে কার্যালয়ের সর্বত্র তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে দেওয়া হয়। বোর্ড খুলে ফেলা হয়। ‘হিন্দুস্থান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’-এর যুগ্ম সম্পাদক সৌরভ দত্তের অভিযোগ, ‘‘এএসপি এবং ডিএসপি রক্ষা করে দুর্গাপুর বাঁচাতে আমরা সবাই দিল্লির পথে। আর এই সময়ে পুরসভা দখল করার প্রথম ধাপ হিসেবে আমাদের ইউনিয়ন অফিস দখল করে, আসবাবপত্র বের করে নিয়ে গেল তৃণমূলের লোকজন।’’ তাঁর দাবি, রাজ্যের স্বার্থেই কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তাঁদের আন্দোলন সমর্থন করা উচিত শাসক দলের। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘তার বদলে লুঠপাট করল ওরা।’’ সিটুর জেলা সভাপতি বিনয়েন্দ্র কিশোর চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্র ও রাজ্য— দুই সরকারই শিল্পবিরোধী। দু’পক্ষের আঁতাঁত এই ঘটনায় ফের স্পষ্ট হল।’’
সিটুর আরও অভিযোগ, তাদের কার্যালয়ের উল্টো দিকে একটি আবাসনে তৃণমূলের নির্বাচনী কার্যালয় গড়া হয়েছে। দলের আসানসোলের নেতারা বাইরে থেকে অনেককে নিয়ে এসেছেন। সেখানে ভোট লুঠের পরিকল্পনা হচ্ছে বলে অভিযোগ। তার অঙ্গ হিসেবে আতঙ্ক ছড়াতেই এ দিন এমন ঘটানো হয়েছে বলে সিটু নেতা-কর্মীদের দাবি।
অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। দলের দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লক সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায় নির্বাচনী কার্যালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। নিজেদের প্রাসঙ্গিক করে তুলতে সিপিএমেরই কেউ এমন করেছে। নিজেদের পতাকা খুলে আমাদের পতাকা লাগিয়েছে।’’ দুর্গাপুরে নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির বক্তব্য, ‘‘আসানসোলের সিটু বা সিপিএম নেতাদের সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক রয়েছে। এখানকার নেতারা আমায় হয়তো চেনেন না। তাই এমন অভিযোগ করছেন।’’ ‘বহিরাগত’ অভিযোগ উড়িয়ে তিনি পাল্টা বলেন, ‘‘সবাই এই জেলার বাসিন্দা। বরং সেই হিসেবে তো সিপিএমের সূর্যকান্ত মিশ্র বহিরাগত!’’