চিকিৎসায় গাফিলতির নালিশ

১২ ঘণ্টায় জোড়া মৃত্যু মেডিক্যালে

প্রথম ঘটনা সোমবার বিকেলের। বর্ধমান শহরের ৫ নম্বর ইছালাবাদের বাসিন্দা বিমল বাহাদুর ছেত্রী (২৪) সর্পদষ্ট হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। অভিযোগ, হাসপাতালে আনার বেশ কিছুক্ষণ পরে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৭ ০১:৩১
Share:

রিম্পাদেবীর স্বামী। নিজস্ব চিত্র

বারো ঘন্টার মধ্যে চিকিৎসার গাফিলতিতে দুই রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। দু’টি ঘটনার পরেই রোগীর পরিজনেরা উত্তেজিত হয়ে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশকে পরিস্থিতি আয়ত্বে আনতে হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, দুটি ঘটনাতেই তদন্ত করে দেখা হবে।

Advertisement

প্রথম ঘটনা সোমবার বিকেলের। বর্ধমান শহরের ৫ নম্বর ইছালাবাদের বাসিন্দা বিমল বাহাদুর ছেত্রী (২৪) সর্পদষ্ট হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। অভিযোগ, হাসপাতালে আনার বেশ কিছুক্ষণ পরে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। চিকিৎসা শুরুর দশ মিনিটের মধ্যেই ওই যুবক মারা যান। এরপরেই চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ শুরু করেন মৃতের পরিজনেরা। তাঁদের অভিযোগ, বেলা দু’টো নাগাদ বিমল বাহাদুরকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। অথচ তাঁর চিকিৎসা শুরু হতে বিকেল সাড়ে চারটে বেজে যায়।

যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক দাবি, সাপে কাটা ওই যুবককে চারটে নাগাদ হাসপাতালে আনা হয়েছিল। মিনিট খানেকের মধ্যেই চিকিৎসা শুরু করা হয়েছিল। ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা বলেন, “তদন্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।”

Advertisement

দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে ওই দিনই গভীর রাতে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দিতে এসে মৃত্যু হয় শহরের বিধানপল্লির বাসিন্দা রিম্পা চক্রবর্তীর (৩০)। মৃতার স্বামী বিষ্ণু চক্রবর্তীর অভিযোগ, চিকিৎসক তপন মণ্ডলের তত্ত্বাবধানে (ইউনিট ১) রিম্পাদেবী ভর্তি হয়েছিলেন। চিকিৎসার গাফিলতিতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছেন তিনি। চিঠির প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে হাসপাতাল সুপার, জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, বর্ধমান থানা ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে। বিষ্ণুবাবুর অভিযোগ, ‘‘ডাক্তারদের অবহেলায় আমার স্ত্রী প্রচন্ড যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে মারা গিয়েছেন।’’ তাঁর পরিজনদেরও দাবি, সাধারণ প্রসবের বদলে তাঁরা অস্ত্রোপচার করে প্রসব করানোর কথা চিকিৎসককে বলেছিলেন। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করা হয়। বিষ্ণবাবুর দাবি, “অস্ত্রোপচার করে প্রসব করানো হলে স্ত্রী ও সন্তান বেঁচে যেত।’’ তাঁদের সাত বছরের একটি মেয়েও আছে।

তবে প্রসূতি বিভাগ সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রথম সন্তান সাধারণ প্রসবে হওয়ায় দ্বিতীয় সন্তানকেও নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণ প্রসব করানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। সোমবার রাত দু’টো নাগাদ প্রসূতির অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করে। ডেপুটি সুপারের কথায়, “কী কারণে ওই প্রসূতি মারা গেলেন, তা জানতে ময়না-তদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement