পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
মোটরবাইকে আটকে জরিমানার নামে তোলাবাজি করছে পুলিশ, এই অভিযোগ শনিবার ধুন্ধুমার বাধল কাটোয়ায়। শহরের স্টেশনবাজার চৌরাস্তায় পুলিশকর্তাদের ঘিরে ক্ষোভ জানান মোটরবাইক আরোহীরা। পরিস্থিতি সামাল দেন পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ মোটরবাইকে কাটোয়ায় কাজে এসেছিলেন কেতুগ্রামের বড়মালিহার বাসিন্দা মানব ঘোষ। তিনি পেশায় সেনাকর্মী। স্টেশনবাজার চৌরাস্তা মোড়ে কর্মরত এক মহিলা ট্র্যাফিক কনস্টেবল তাঁর গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চান। মানববাবু অভিযোগ করেন, কাগজ বার করতে দেরি হওয়ায় ওই কনস্টেবল তাঁর সঙ্গে অশালীন ভাষায় কথা বলেন। কাগজ দেখানোর পরেই তিনি কিছু নথি নিয়ে নেন। সেই সঙ্গে এক হাজার টাকা জরিমানা দিতে বলেন। কারণ জানতে চাইলে কোনও উত্তর না দিয়ে নথি ও মোটরবাইক, দু’টিই আটকে রাখেন।
মানববাবুর দাবি, ঘণ্টাখানেক তাঁকে আটকে রাখলে বচসা শুরু হয়। ততক্ষণে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে ওই মহিলা কনস্টেবলের বিরুদ্ধে টাকা আদায়ের অভিযোগ তুলতে শুরু করেন। এরই মধ্যে কাকাদহ থেকে কাটোয়া হাসপাতালে আসা জসিমুদ্দিন করিকর নামে এক ব্যক্তির মোটরবাইক আটকে ১১০০ টাকা জরিমানা করা হয়। তাঁর সঙ্গে তিন মহিলা ছিলেন। এক মহিলা ভিড়ের মধ্যে অসুস্থ বোধ করেন। ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হলে কনস্টেবল পাশে একটি দোকানে গিয়ে আশ্রয় নেন। ইতিমধ্যে পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় চৌরাস্তার মোড়ে আসেন। তাঁর কাছে ট্র্যাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানাতে থাকেন মোটরবাইক আরোহীরা। বিশ্বজিৎ অধিকারী, প্রতাপ করদের অভিযোগ, ‘‘বাসস্ট্যান্ড থেকে গোয়েঙ্কা মোড়ে আসার মধ্যেই দু’হাজার টাকা জরিমানা চলে যায়। উপযুক্ত কাগজপত্র ও হেলমেট থাকলেও অনেক সময় জরিমানা চাওয়া হয়।’’
ওই মহিলা কনস্টেবল অবশ্য টাকা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘ওই মোটরবাইক আরোহী আমাকে গালিগালাজ করেন। আমি ওঁর নথিপত্র আটকে রাখিনি, শুধু দেখাতে বলেছিলাম।’’ কাটোয়ার ট্র্যাফিক ওসি সংগ্রাম মোহিতে পরে বলেন, ‘‘ওই মোটরবাইক চালকের কাছে বিমা ও দূষণ সংক্রান্ত নথি ছিল না। সে জন্য যে জরিমানা করা উচিত, সেটাই করা হয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ট্র্যাফিক ব্যবস্থা মানতে না চাইলে তো সমস্যা। আমরা তো আরোহীর সুরক্ষার জন্যই নিয়ম মানতে বলি।’’ সম্প্রতি কাটোয়া শহরের বিভিন্ন রাস্তায় গাড়ি রাখলে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে বলে জেলা পুলিশের নির্দেশিকা টাঙনো হয়। জলট্যাঙ্ক, খাসি মার্কেট ও হাসপাতাল মোড়ে তিনটি পার্কিংয়ের জায়গার ব্যবস্থাও করে পুরসভা।