Lok Sabha Election 2024

বিজেপিকে ‘সাহায্য’, তোপের মুখে পুরপ্রধান

লোকসভা ভোটের পরে, বৃহস্পতিবার প্রথম পুরবোর্ডের বৈঠক ডেকেছিলেন পুরপ্রধান। কিন্তু তিনি-সহ মাত্র তিন জন সদস্য হাজির হয়েছিলেন বৈঠকে।

Advertisement

প্রণব দেবনাথ

দাঁইহাট শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২৪ ০৮:১৭
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

চোদ্দো আসনের দাঁইহাট পুরসভায় বিরোধী সদস্য নেই এক জনও। শহরে শক্তপোক্ত সংগঠন রয়েছে, এমন দাবি করে না প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। তবুও এই শহরে লোকসভা ভোটে বিজেপি প্রায় আড়াই হাজার ভোটে পিছনে ফেলেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলকে। তার পরেই তৃণমূলের পুর-প্রতিনিধিদের একাংশ পুর-প্রধান প্রদীপ রায়ের বিরুদ্ধে বিজেপি-কে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে তুলে সরব হয়েছেন। আবার তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও দলবিরোধী কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগ তুলে পাল্টা তোপ দেগেছেন পুর-প্রধানও।

Advertisement

তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, পুর-এলাকায় কেন এমন ফল হল, তার পর্যালোচনা করবেন দলীয় নেতৃত্ব। তবে তার আগেই কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু হওয়ায় কোন্দল কার্যত বেআব্রু হয়েছে বলে মনে করছেন দলেরই একাংশ।

লোকসভা ভোটের পরে, বৃহস্পতিবার প্রথম পুরবোর্ডের বৈঠক ডেকেছিলেন পুরপ্রধান। কিন্তু তিনি-সহ মাত্র তিন জন সদস্য হাজির হয়েছিলেন বৈঠকে। কোরাম না হওয়ায় শেষপর্যন্ত বৈঠক বাতিল করেন পুরপ্রধান। দলীয় সূত্রের খবর, বৈঠকে বাকিদের অনুপস্থিতির বিষয়টি তিনি দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন।

Advertisement

অন্য দিকে, শহরে দলের ভোট-বিপর্যয়ের জন্য পুরপ্রধানকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বৈঠকে অনুপস্থিত তৃণমূলের পুরপ্রতিনিধিরা। শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুর-প্রতিনিধি অসীম ঘোষ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পুর-প্রতিনিধি দলজিৎ মণ্ডল বলেন, “পুরপ্রধান সিপিএম থেকে আমাদের দলে এসে সহজেই পদ পেয়েছেন। তাই এখনও তৃণমূল হয়ে উঠতে পারেননি। তিনি বরাবরই দলীয় পুর-সদস্যদের উপেক্ষা করে বিরোধীদের হয়ে কাজ করে চলেছেন। ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে তিনি লোকসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থীর হয়ে কাজ করেছেন। আমরা এর প্রতিবাদ করলেও উনি কথা শোনেননি। পুরপ্রধানের জন্যই আজ শহরে ন’টি ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে গিয়েছে। দলীয় নেতৃত্ব সবই জানেন।” তেমনই ১ নম্বর ওয়ার্ডের পুর-প্রতিনিধি কার্তিক সাহা ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুর-প্রতিনিধি শুভ্রা ঢালির অভিযোগ, “পুরপ্রধানের জন্যই আজ শহরে বিজেপির ভোট বাড়ছে। পুরসভায় গেলে মনেই হয় না যে ক্ষমতায় তৃণমূল রয়েছে। ওঁর আচরণে আমরা ক্ষুব্ধ।”

পাল্টা দিয়েছেন পুরপ্রধানও। প্রদীপের বক্তব্য, “আমি সিপিএম থেকে তৃণমূলে এসেছিলাম উন্নয়নের কাজ করব বলে। পদের জন্য নয়। ওঁদের (তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ পুর-প্রতিনিধিরা) বক্তব্য, আমি নাকি বিজেপির হয়ে কাজ করছি। দলের ক্ষতি হবে বলে ভোটের আগে এ নিয়ে কিছু বলিনি। কিন্তু, এখন বলতে বাধ্য হচ্ছি, ওঁরা দলবিরোধী কাজ করে চলেছেন। আমি সরে যাওয়ার আগে ওঁদের সব দুর্নীতি ও দলবিরোধী কাজ সাংবাদিক বৈঠক করে বলে যাব। এ সব দলীয় নেতৃত্বকে আগেই জানিয়ে রেখেছি।”

দাঁইহাট শহর তৃণমূল সভাপতি রাধানাথ ভট্টাচার্য বলেন, “পুরপ্রধান বিজেপির হয়ে ভোটে কাজ করেছেন, এ কথা মানতে পারছি না। এ ভাবে আকচাআকচি না করে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া উচিত পুর-প্রতিনিধিদের।”

দাঁইহাটে তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ নতুন কিছু নয়। তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রায় এক বছর ধরে পুরপ্রধানের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছে না দলের বেশ কিছু পুর-প্রতিনিধির। তার জেরে আগেও পুরবোর্ডের বৈঠক বয়কট করেছিলেন বেশ কয়েক জন। এমনকি, দলের জেলা নেতৃত্বের হস্তক্ষেপেও
সমস্যা মেটেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement