Durgapur

টাকা নিয়েও হয়নি বাড়ি, নালিশ শহরে

সন্ধ্যা জানান, ওই প্রকল্পে দুর্গাপুর পুরসভায় তিনি আবেদন জানিয়েছিলেন। তাঁর আবেদন মঞ্জুর হয়। ধাপে-ধাপে বাড়ির জন্য প্রায় ৩ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:০১
Share:

অভিযোগ করেছেন সন্ধ্যা নায়েক নামে এই মহিলা। নিজস্ব চিত্র

‘সবার জন্য বাড়ি’ প্রকল্পের টাকা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার পুরোটাই নিয়েছেন। কিন্তু কাজ করেননি বলে অভিযোগ। দুর্গাপুরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ভিড়িঙ্গির ঘটনা। শুক্রবার স্থানীয় বাসিন্দা, পুরসভার প্রাক্তন স্বাস্থ্যকর্মী সন্ধ্যা নায়েক রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে দাবি করেছেন। মন্ত্রী বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। গোটা ঘটনার সঙ্গে নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের দুই নেতার। যদিও তাঁরা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

Advertisement

সন্ধ্যা জানান, ওই প্রকল্পে দুর্গাপুর পুরসভায় তিনি আবেদন জানিয়েছিলেন। তাঁর আবেদন মঞ্জুর হয়। ধাপে-ধাপে বাড়ির জন্য প্রায় ৩ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। সন্ধ্যার সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে অভিযোগ, “সুধীরের কথা মতো পুরো টাকা ঠিকাদারকে দিয়ে দিই। বছরখানেক আগে কাজ শুরু হয়। ছ’মাস ধরে অর্ধেক কাজও হয়নি। শেষ ছ’মাস একেবারেই কাজ হয়নি। সেই অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে বাড়ি। আমি বড় অসহায় অবস্থায় রয়েছি।” তাঁর দাবি, প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের পরামর্শে তিনি বাড়ি নির্মাণের জন্য যোগাযোগ করেছিলেন তৃণমূলের ওয়ার্ড কনভেনার সুধীর বাউড়ির সঙ্গে। সুধীর ঠিকাদার শিবশঙ্কর বার্নওয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। তাঁর সঙ্গে বাড়ি নির্মাণের চুক্তি হয়।

বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। দলের রাজ্য সম্পাদক তথা দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, “দুর্গাপুরে টেন্ডার-রাজের নেতা তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর প্রভাত চট্টোপাধ্যায় ওই মহিলাকে নির্দিষ্ট ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজ করানোর নির্দেশ দেন। সব টাকা চলে গেল। বাড়ি হল না। সারা রাজ্যে এ ভাবেই কেন্দ্রের দেওয়া টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তৃণমূল নেতারা।” যদিও, প্রভাত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন কথা। আমার সঙ্গে মহিলার ঠিকাদার নিয়ে কোনও কথা হয়নি। কয়েক দিন আগে উনি ফোনে জানান, ওঁর বাড়ির কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমি এখন আর কাউন্সিলর নই। তবু আমি বিষয়টি দেখার চেষ্টা করব বলেছিলাম।” তিনি দাবি করেন, ওই প্রকল্পের বাড়ি নিজেদের করতে হবে, ঠিকাদারদের মাধ্যমে নয়, কাউন্সিলর থাকাকালীন উপভোক্তাদের নিয়ে ওয়ার্ডে বৈঠক করে সে কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।

Advertisement

এ দিকে, সুধীর জানিয়েছেন, মহিলার সঙ্গে ঠিকাদারের যোগাযোগ তিনি করিয়ে দিয়েছিলেন। ঠিকাদারকে টাকা দেওয়ার কথাও তিনি মহিলাকে বলেছিলেন। তিনি বলেন, “ওই মহিলা মিস্ত্রি জোগাড় করে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। আমি যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলাম। এটুকুই। টাকা দিতে বলেছিলাম। পরে শুনি কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমরা দেখছি বিষয়টি।” সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের প্রতিক্রিয়া, “মিস্ত্রিদের থাকায় জায়গা জোগাড় করতে না পারায় তাঁরা চলে গিয়েছিলেন। সমস্যা মিটে গিয়েছে। এ বার দ্রুত কাজ হবে।”

পঞ্চায়েত মন্ত্রী বলেন, “প্রকল্পটির কাজে ঠিকাদারের কোনও বিষয় নেই। উপভোক্তা নিজের বাড়ি নিজেই তৈরি করে নেন। লিখিত অভিযোগ হাতে আসেনি। নির্দিষ্ট তথ্য পেলে খোঁজ নিয়ে দেখব। উপভোক্তার বাড়ি কেন সম্পূর্ণ হয়নি, তা খোঁজ নিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement