প্রতিশ্রুতি ছিল পরিচ্ছন্ন শহর, হল কই

পুরসভার দফতরে সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মেমারির পুরপ্রধান স্বপন বিষয়ী। নাগরিকদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন সৌমেন দত্ত। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।পুরসভার দফতরে সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মেমারির পুরপ্রধান স্বপন বিষয়ী। নাগরিকদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন সৌমেন দত্ত। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:০৪
Share:

দমকল ভবন তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। বেশ কয়েক মাস ধরে শুনছি, চালু হবে। কিন্তু হচ্ছে আর কই?

Advertisement

সমরেন্দ্র দাশগুপ্ত, রক্ষাকালীতলা

Advertisement

পুরপ্রধান: মেমারি শহর লাগোয়া এলাকা হিমঘর ও চালকলে ভর্তি। কিন্তু আগের সরকার ভাবেইনি, মেমারিতে দমকলের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা সরকারে আসার পরেই দমকল তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছি। নানা কারণে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। সেই সমস্যা কাটিয়ে পুরবোর্ডের সভায় ঠিক হয়েছে, দমকল মন্ত্রীর সময় পেলে মেমারিবাসীকে নতুন বছরের উপহার দেওয়া সম্ভব হবে।

মেমারির নিকাশির অবস্থা বেহাল হয়ে পড়ছে। গত বর্ষায় শহরের একাংশ ভেসে গিয়েছিল। শোনা যাচ্ছে, শহরকে উন্নীত করার পরিকল্পনা হয়েছে।

আশিস ঘোষদস্তিদার, মাঝের পাড়া

পুরপ্রধান: শহরের ৮, ১০, ১১ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের একাংশের নিকাশির জল বড় নর্দমার মাধ্যমে গাঙুরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে টাকা রয়েছে। ওই নর্দমা তৈরির জন্য জায়গা নিতে হবে, সে জন্য চাষিদের সঙ্গে কথাও চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতির জন্য আমরা প্রতি বছর গাঙুরকে সংস্কার করে চলেছি। এ ছাড়াও বিদ্যাসাগর পল্লি ও আজাদ নগরকে ঘিরে পরিকল্পিত শহর তৈরির চিন্তাভাবনা নেওয়া হয়েছে।

এই মূ্হুর্তে মেমারির ক্রীড়া-জগতে ভাটা। নতুন স্টেডিয়াম কবে খুলবে এবং শহরের খেলাধুলোয় সার্বিক কী উন্নয়ন ঘটানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন?

সৌম্যকান্তি সিংহ, বিদ্যাসাগর পল্লি

পুরপ্রধান: শহরের বিদ্যাসাগর স্মৃতি বিদ্যামন্দিরকে (ইউনিট ২) ধন্যবাদ। তাঁরা মাঠ রাজ্য সরকারের হাতে তুলে না দিলে মেমারিতে স্টেডিয়াম হতো না। ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় আধুনিক মানের স্টেডিয়ামে কলকাতা মাঠের খেলা আমরা মেমারিতে করাতে ইচ্ছুক।

জেলার সদর শহরেই বর্ধমান দক্ষিণ মহকুমার যাবতীয় দফতর। জেলা ভাগের পর মেমারিকে বর্ধমান দক্ষিণের মহকুমা শহরে পরিণত করা যায় না?

অচিন্ত্য বিশ্বাস, ডিভিসি পাড়া

পুরপ্রধান: আমরা ২০১৪ সাল থেকেই এ ব্যাপারে জেলাশাসককে চিঠি দিয়েছি। সদর দক্ষিণের একমাত্র শহর মেমারি। মহকুমাশাসকের দফতর থাকায় সরকারি দফতরের জায়গাও রয়েছে। প্রয়োজনে পুরসভাও প্রাথমিক ভাবে সাহায্য করতে পারবে।

শহরের ভিতর দুটি রেলগেট। শহরের দমবন্ধ পরিস্থিতি কাটাতে উড়ালপুলের প্রয়োজন।

প্রসেনজিৎ দত্ত, সৎসঙ্গ পাড়া

পুরপ্রধান: জিটি রোডের উপর উড়ালপুলের জন্য মাটি পরীক্ষা পর্যন্ত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রের বিমাতৃসুলভ মনোভাব উড়ালপুল তৈরিতে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কৃষ্ণবাজারের উপর উড়ালপুল তৈরির জন্য মেমারি পুরসভার নগরায়নের বাজেটে সাত কোটি টাকা ধরা হয়েছে। তা ছাড়াও ইলেমপুর রেলগেটে আন্ডারপাস করার জন্য রেলকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।

শহরে মেয়েদের স্কুল ও কলেজের প্রয়োজন রয়েছে। এ ব্যাপারে পুরসভা কী উদ্যোগী হবে?

সমীর সু, সাবরেজিস্ট্রি পাড়া

পুরপ্রধান: পুরসভা তো উদ্যোগী হয়েই রয়েছে। সে জন্য চার নম্বর ওয়ার্ডে মেয়েদের একটি স্কুল ভবন তৈরির কাজ চলছে। সামনের মরসুম থেকে তা চালু হয়ে যাবে। মহিলা কলেজ তৈরি করার দাবিতে একটি রিপোর্ট তৈরি করে জেলাশাসককে পাঠানো হচ্ছে।

পুরপ্রধান হিসেবে আপনি প্রথম পাঁচ বছরে শহরের উন্নয়নে যে গতি এনেছিলেন, দ্বিতীয় দফায় তাতে বেশ ভাটা পড়েছে। কেন?

প্রদীপ কোলে, জোয়ানপুর

পুরপ্রধান: তিনটে নির্বাচন, ই-টেন্ডারে ঠিকাদাররা যোগ দিচ্ছেন না বলে দ্বিতীয় দফায় উন্নয়নে ভাটা পড়েছে বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু সামাজিক উন্নয়ন জোর কদমে চলছে।

২০১৫ সালে পুরভোটের সময় আপনার প্রতিশ্রুতি ছিল, ক্লিন ও গ্রিন সিটি, প্লাস্টিকমুক্ত শহর তৈরি। সে সবের উদ্যোগ তো দেখতেই পাচ্ছি না, উল্টে শিশুদের পার্কগুলিও ভেঙে পড়ছে।

প্রসূন দাস, চেকপোস্ট

পুরপ্রধান: ১০০ শতাংশ মেনে নিচ্ছি শিশুদের পার্ক তৈরি বা সংস্কার করতে আমরা ব্যর্থ। খুব শীঘ্রই আমরা শিশুদের পার্ক সংস্কার তো করবই, বয়স্কদের জন্যেও পার্ক তৈরির চিন্তাভাবনা রয়েছে। আর প্লাস্টিকমুক্ত পুরসভা তো এক দিনে সম্ভব নয়। সে জন্য আমরা চিন্তাভাবনা করে সকলকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলব। আশা করি, এক বছর পরে মেমারি শহর প্লাস্টিকমুক্ত পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও সবুজায়নের শহর গড়ে তুলতে পারব।

টোটোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শহরে যানজটও বাড়ছে। গরিব এলাকায় শৌচাগার তৈরির কোনও পরিকল্পনা আছে?

সৈয়দ বসির রসুল, পশ্চিম পাড়া

পুরপ্রধান: চেকপোস্ট থেকে বামুনপাড়া, নিউ মার্কেট, কৃষ্ণ বাজারে যানজট হচ্ছে। শহরে ১৭৩টি টোটো রয়েছে। সমস্যা মেটানোর জন্য দিন ও রাত, এই দু’ভাগে টোটো চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হতে পারে। গরিব এলাকায় শৌচাগার তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।

খাঁড়ো গ্রামে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নিজস্ব ভবন নেই। আবার প্রাথমিক স্কুলেরও রান্নাঘরও নেই।

সুভাষ চক্রবর্তী, ডিভিসি পাড়া

পুরপ্রধান: জায়গা পাওয়া গেলে ওই এলাকার দু’টি সমস্যায় মিটিয়ে ফেলা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement