গ্রামবাসীদের সচেতন করতে ব্যস্ত ছাত্রছাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র।
কখনও বাড়ির উঠোনে ঢুকে সটান প্রশ্ন, ‘শৌচাগার নেই কেন?’, কখনও বা রীতিমতো শিবির করে স্বাস্থ্যপরীক্ষা। —গত কয়েক দিন ধরে এ ভাবেই কাটোয়ার অজয়পল্লি, ঘুটকেপাড়া, সর্দারপাড়ায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরির কাজ করছেন কাটোয়া কলেজর প্রায় ১৪০ জন পড়ুয়া।
মহকুমাশাসকের বাংলো থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে এই এলাকাগুলিতে বন্যায় ভিটেছাড়া মানুষজনের একটি বড় অংশ বাস করেন। বেশির ভাগ ঘরেই শৌচাগার, বিদ্যুতের সংযোগ নেই। এমন এলাকায় প্রতিদিন সকাল ৮টা বাজলেই শিবির সাজিয়ে বসছেন ছাত্ররা। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ন্যাশনাল সার্ভিস স্কিমের (এনএসএস) অধীনে পড়ুয়ারা এই কাজ করছেন। ‘মিশন নির্মল বাংলা’, কন্যাভ্রূণ হত্যা, এডস-সহ বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা প্রচার চালাচ্ছেন পড়ুয়ারা। এই কাজে পড়ুয়াদের সঙ্গে রয়েছেন চার জন শিক্ষক। শিবির করে চক্ষু পরীক্ষা, রক্তের শ্রেণি নির্ণয়-সহ বিভিন্ন কাজও করা হচ্ছে।
এই কাজে কেমন অভিজ্ঞতা হচ্ছে ছাত্রদের? তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া শ্রাবণী দাস, দেবজিৎ সাহা, সালমা খাতুনরা বলেন, ‘‘অনেকের হাতেই রয়েছে মোবাইল। কিন্তু খোলা জায়গায় শৌচকর্ম করেন। এর বিরুদ্ধেই আমাদের সচেতনতা প্রচার।’’
আর এমন প্রচার অভিযানে খানিকটা হলেও বোধহয় টনক নড়েছে বাসিন্দাদের। তাই বোধহয় খেতমজুর পরিবার থেকে আসা তাপস দাস, গৌতম মণ্ডল, অনিমা দাসদের প্রতিশ্রুতি, ‘‘সরকারি সাহায্য মিললে দ্রুত বাড়িতে শৌচাগার বানাব।’’ ছাত্রদের এমন উদ্যোগের প্রশংসা করে মহকুমাশাক খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, ‘‘অনুষ্ঠান করে বা লিফলেট বিলি করে অনেক প্রচার হল। পড়ুয়ারা এ ভাবে পথে নামলে কাটোয়াকে দ্রুত আমরা ‘নির্মল মহকুমা’ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।’’