ভেঙে দেওয়া হয়েছে পুলিশের গাড়ির সামনের কাচ। নিজস্ব চিত্র।
কয়লা ‘চুরি’ আটকাতে গিয়ে আক্রান্ত হল সিআইএসএফ ও পুলিশ। ‘হামলাকারীদের’ ছোড়া পাথরে তাদের দু’টি গাড়ির সামনের কাচও ভেঙেছে বলে অভিযোগ। সোমবার রাতে পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরে ইসিএলের শোনপুর বাজারি প্রকল্পের নতুন সিএইচপি কোল-হ্যান্ডলিং প্ল্যান্টের ঘটনা। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বলেন, “সিআইএসএফ অভিযোগ দায়ের করেছে। তাতে পুলিশের ও সিআইএসএফের গাড়ি ভাঙচুরের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্ল্যান্টে মালগাড়ি থেকে কয়লা চুরির খবর পেয়ে সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় পুলিশ, সিআইএসএফ ও ইসিএলের নিজস্ব বাহিনী সেখানে হানা দেয়। পুলিশ জানায়, তাদের দেখে ঘটনাস্থল ছেড়ে চম্পট দেয় ‘দুষ্কৃতীরা’। পুলিশের দাবি, তবে কয়লা নিয়ে যাওয়ার জন্য ‘দুষ্কৃতীদের’ নিয়ে আসা বেশ কিছু সাইকেল বাজেয়াপ্ত করা হয়। এর পরেই, কিছুটা দূরে এলাকার কয়েক জন মহিলা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তখনকার মতো পরিস্থিতিনিয়ন্ত্রণে আসে।
অভিযোগ, রাত ১১টা নাগাদ কয়লা ‘চোরেরা’ ফের ঘটনাস্থলে যায়। অভিযোগ, সিআইএসএফ ও পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই শ’খানেক মহিলা তাদের গাড়ি তাক করে ইট, পাথর ছুড়তে থাকে। এর জেরে, সিআইএসএফ ও পুলিশের একটি করে গাড়ির ক্ষতি হয়েছে। পুলিশে অভিযোগকারী, সিআইএসএফ-এর ইনস্পেক্টর এলায়ে রাজা জানান, পাথরের আঘাতে তাঁদের এক জওয়ান অল্প চোট পেয়েছেন। তাঁকে সংস্থার ছোড়া রিজিওনাল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে, কাল্লা সেন্ট্রাল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। সেখানে চিকিৎসার পরে তাঁকে ছেড়েদেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের অভিযোগ, “হামলাকারী কয়লা-চোরেরা সবাই তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী জানান, সম্প্রতি তিনি ও জামুড়িয়ার বিধায়ক হরেরাম সিংহ ইসিএল আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে সংস্থার নিজস্ব রক্ষী এবং সিআইএসএফ দিয়ে নজরদারি আরও বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছিলেন। পাশাপাশি, অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারির দাবিও জানিয়েছেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ।
শোনপুর বাজারি প্রকল্পের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক বলেন, “সিআইএসএফ জওয়ান এবং সংস্থার নিজস্ব রক্ষীরা চুরি আটকাতে তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছেন।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।