নারায়ণকুড়িতে। নিজস্ব চিত্র
সংস্থায় এ বার ‘হাইওয়াল মাইনিং’ পদ্ধতিতে কয়লা খনন শুরু হতে চলেছে। এ জন্য প্রাথমিক ভাবে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি ঠিকা সংস্থাকে বরাতও দেওয়া হয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছে ইসিএল।
বিষয়টি নিয়ে ইসিএল-এর সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায়ের দাবি, ‘‘হাইওয়াল মাইনিং পদ্ধতিটি ব্যবহারের ফলে কয়লা উত্তোলন বাড়বে।’’ সংস্থার কর্তারা জানান, ইসিএল-এর মোট ১৪টি ‘এরিয়া’ আছে। প্রথমে কুনস্তোরিয়া এরিয়ার বন্ধ পড়ে থাকা নারায়ণকুড়ি খোলামুখ খনিতে ‘হাইওয়াল’ পদ্ধতি প্রয়োগ করে মজুত কয়লা উত্তোলন শুরু হবে। ইসিএল-এর দাবি, নারায়ণকুড়ি খোলা মুখ খনিগর্ভে প্রায় ১৭ লক্ষ টন কয়লা মজুত রয়েছে। এই পদ্ধতিতে কয়লা তুলতে প্রায় চার বছর সময় লাগবে।
এই পদ্ধতিতে কী ভাবে চলে কয়লা খনন? খনি বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, খোলামুখ খনি সম্প্রসারণের জন্য জমি পাওয়া না গেলে, খনি বন্ধ করে দিতে হয়। অথচ, ওই খনিগর্ভে প্রচুর কয়লা মজুত থাকে। খনির কয়লা স্তরের দেওয়াল বরাবর যন্ত্রের সাহায্যে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে উপরের মাটি না সরিয়ে মজুত কয়লা উত্তোলন করা যায় এই পদ্ধতিতে। ইসিএল-এর দাবি, এই পদ্ধতির ফলে, কয়লা উত্তোলন প্রক্রিয়াটি লাভজনক হবে। পাশাপাশি, কয়লা নষ্ট হবে না। নীলাদ্রিবাবু বলেন, ‘‘বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা সাতগ্রাম এরিয়ার নিমচা ও মোগমা এরিয়ার রাজপুরা খোলামুখ খনিতে ‘হাইওয়াল মাইনিং’ পদ্ধতিটি কার্যকর হবে। তার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। প্রতিটি সুড়ঙ্গ পথে তিনশো মিটার দূর পর্যন্ত যাওয়া যাবে।’’
তবে আইএনটিইউসি নেতা চণ্ডীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সিটু নেতা দেবীদাস বন্দ্যোপাধ্যায়েরা জানান, এই পদ্ধতিতে ভূগর্ভস্থ কয়লা তোলার পরে, মাটির তলায় ফাঁকা অংশ ভরাট করা দরকার। পাশাপাশি, তাঁদের দাবি, ‘‘ঠিকা সংস্থার পরিবর্তে ইসিএল নিজের উদ্যোগে খনিগুলি চালু করুক।’’
এ দিকে, কুনস্তোরিয়া এরিয়া সূত্রে জানা গিয়েছে, এই এরিয়ার পরাশিয়া, বেলবাঁধ, অমৃতনগর ও বাঁশড়া ভূগর্ভস্থ খনিতে যন্ত্রের সাহায্যে ‘কন্টিনিউয়াস মাইনিং’ পদ্ধতির মাধ্যমে কয়লা উত্তোলন করা হবে। এই চারটি খনি থেকে ৪০০ লক্ষ টন কয়লা উত্তোলন হবে। সময় লাগবে প্রায় কুড়ি বছর। ‘হাইওয়াল’ পদ্ধতিতে কয়লা তোলার প্রযুক্তি অন্য খোলামুখ খনির ক্ষেত্রেও কার্যকর করা হতে পারে।