ফাইল ছবি।
দুর্গাপুরে বুধবার দুই বর্ধমানের প্রশাসনিক বৈঠকে পঞ্চায়েত ভোটের দামামা কার্যত বাজিয়েই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জনপ্রতিনিধিদের বাড়তি নজর দিতে বললেন পরিষেবায়। রাজ্যের সমস্ত জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতিকে নির্দেশ দিলেন, পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা পর্যন্ত শুধু মাত্র গ্রামীণ রাস্তা নির্মাণ ও মেরামতিতেই নজর দিতে।
বিভিন্ন কাজের জন্য মোট খরচের ১৫ শতাংশ অর্থ এখন সরাসরি হাতে পায় জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতি। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের দিকে তাকিয়ে এ বার রাজ্যের সমস্ত জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতিকে গ্রামীণ সড়ক নির্মাণে জোর দেওয়ার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, ‘‘গ্রামীণ রাস্তা খারাপ থাকলে কেউ ভোট পাবেন না। এটা মাথায় রাখবেন।’’ এ কথা বলতে গিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, ‘‘মাথায় করে ইট বয়ে দেবেন। দরকার হলে আমাকে ডাকবেন। আমি আগে এ রকম করেছি।’’
এমনিতে মমতা বরাবরই অত্যন্ত সহজ-সরল জীবনযাপন করেন। ছোটবেলা থেকে কঠিন পরিশ্রম করার পাশাপাশি রাজনীতি করেছেন। কার্যত একার হাতে বাংলা থেকে সাড়ে ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়েছেন। বিভিন্ন সময়েই তিনি নিজের যাপনের উদাহরণ দিয়ে থাকেন। বুধবারও তেমনই করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, পঞ্চায়েত ভোট পর্যন্ত জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতি বরাদ্দ টাকায় রাস্তার কাজ করবে। এবং তাদের যে সমস্ত অন্যান্য কাজ করার কথা, তা রাজ্য সরকার দেখবে। মমতা বলেন, ‘‘আপনাদের অন্য কাজ করতে হবে না। এখন শুধু রাস্তাটা করুন। অর্ধেক টাকায় রাস্তা করুন। বাকি টাকা অন্য খাতে খরচ করবেন।’’
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, হঠাৎ করে পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হলে কাজের সুযোগ থাকবে না। তাই যা করার এখনই করতে হবে। এই প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের বিধায়কদের ডেকে ডেকে জিজ্ঞাসা করেন, তাঁরা ধান বুনতে এবং ধান কাটতে পারেন কি না। মমতা বলেন, ‘‘তোমরা কী জান, আমি ধান বুনতে ও কাটতে পারি? আমারও কিন্তু একটা গ্রাম আছে। সবার থেকে ভাল ধান পুঁতে দেব। কেটেও দেব। ছোটবেলায় শীতকালে মামাবাড়ি যেতাম। যে ধান পড়ে থাকত সেটা জমাতাম। আগে গ্রামের দোকানে ধান দিয়ে জিনিস পাওয়া যেত। সেই জমানো ধান দিয়ে আমরা আলুর চপ খেতাম, চুলের ফিতে কিনতাম। আমি জানি না, এখনও এ রকম বিনিময় চলে কি না।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।