এ ভাবেই চলে সাফাই। নিজস্ব চিত্র
এক দিকে, তীব্র শীত। অন্য দিকে, কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নেই। দুইয়ের জাঁতাকলে চরম সমস্যায় পড়েছেন বলে অভিযোগ কাটোয়া শহরের সাফাইকর্মীদের।
তাঁদের দাবি, যাঁরা শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখেন, তাঁদেরই খালি হাতে নোংরা, আবর্জনা তুলতে হচ্ছে। এতে রোগ সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। আবার আবর্জনায় মিশে থাকা কাচের টুকরো, পেরেক আঙুলে ঢুকে বাড়ছে বিপদ। পুরসভার যদিও দাবি, সাফাইকর্মীদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে শীঘ্রই ক্যাপ, মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, বুট, অ্যাপ্রন, রেনকোটের মতো প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বিলি করা হবে।
কাটোয়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরে ২০টি ওয়ার্ড পরিছন্ন রাখতে প্রায় ছ’শো সাফাইকর্মী আছেন। তাঁদের মধ্যে আড়াইশো জন মহিলা। ভোর হতে না হতেই রাজপথ থেকে অলিগলি রাস্তার ময়লা ঝাঁট দিয়ে জড়ো করে রাখেন তাঁরা। তাঁদের কাজ শেষ হতেই আরও এক দল সাফাইকর্মী শহরের নিকাশি নালাগুলি পরিষ্কার করেন। আর এক দল কর্মী শহর ঘুরে সেগুলি ভ্যানে তুলে নিয়ে যান। তাঁরাই আবার বাঁশি বাজিয়ে বাড়ি-বাড়ি থেকেও জঞ্জাল সংগ্রহ করেন। পরে ট্রাক্টরে করে বিপুল পরিমাণ আবর্জনা শহরের এক প্রান্তে লাইনের ধারে ভ্যাটে ফেলে দেওয়া হয়। পুরো কাজটি শেষ করতে হয় বেলা ১১টার মধ্যে। আবার শহরের জনবহুল এলাকায় বিকেলের দিকে রাস্তা সাফাই করা হয়।
সাফাইকর্মী রঞ্জিত হরিজন, স্বপন সাহা, জীবন হরিজনদের দাবি, ‘‘তীব্র শীতে খালি হাতে কাজ করতে গিয়ে খুবই কষ্ট হচ্ছে। নর্দমা থেকে আবর্জনা তুলতে গিয়ে প্রায় দিনই হাতে পেরেক, কাচের টুকরো ঢুকে যাচ্ছে। রক্তে বিষাক্ত কিছু লেগে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।’’ বর্ষায় কাজ করার জন্য রেনকোটের দাবিও করেছেন তাঁরা। আবার সন্ধ্যা হরিজন, লক্ষ্মী হরিজনদের দাবি, ‘‘বাড়ি এসে রান্নাঘরে ঢুকতে ভয় লাগে। কারণ, রোগজীবাণু সঙ্গেই ঘোরে। আমরা চাই, সুরক্ষিত হয়ে কাজ করতে।’’
কাটোয়ার বিধায়ক তথা পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাফাইকর্মীদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে আগেও গ্লাভস, মাস্ক দিয়েছিলাম। কিন্তু অনেকে তা ব্যবহার করতেন না। সাফাইকর্মীদের সচেতনতা বাড়ানো হবে।’’ এর সঙ্গেই ফের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।