‘হামলা’র প্রতিবাদে মিছিল। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের রাশ কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধল দুর্গাপুরের পলাশডিহায়। মঙ্গলবার রাতে এই ঘটনায় দু’জন জখম হন। পুলিশের বড় বাহিনী ও কমব্যাট ফোর্স এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, যে দুই গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে গোলমাল বেধেছে, তারা তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক। বুধবার আদিবাসী গাঁওতার তরফে অভিযোগ করা হয়, ‘তৃণমূল-আশ্রিত’ দুষ্কৃতীরা আদিবাসীদের উপরে চড়াও হয়েছে। প্রতিবাদে ফরিদপুর ফাঁড়িতে বিক্ষোভও দেখানো হয়। তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পলাশডিহা এলাকায় নির্মীয়মাণ বহুতলের কাজের জন্য সামগ্রী সরবরাহ করেন স্থানীয় কয়েকজন। তা নিয়েই বিবাদ চলছে। স্থানীয় যুবক শ্যামসুন্দর বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, তিনি ও তাঁর কয়েকজন সঙ্গী এলাকায় একটি আদিবাসী একটি ক্লাবের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখনই সেখান থেকে তাঁদের উপরে হামলা চালানো হয়। অভিযোগ অস্বীকার করে ক্লাবটির লোকজনের পাল্টা অভিযোগ, আচমকা চড়াও হয়ে তাঁদের সদস্য শ্যামল মুর্মুকে মারধর করা হয়েছে। শ্যামলের কথায়, ‘‘ক্লাব থেকে বেরিয়ে একটি দোকানের পাশে দাঁড়িয়ে গল্প করছিলাম। হঠাৎ কয়েকজন এসে প্রথমে ঘুষি মারে। তার পরে রড দিয়ে মারধর করে।’’
শ্যামসুন্দর ও শ্যামলকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের সিন্ডিকেটের রাশ নিয়ে দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল হয়েছে। দু’পক্ষই তৃণমূলের সমর্থক। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মানস রায়। তিনি অবশ্য বলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই। নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ নিয়ে দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল হয়েছে।’’
বুধবার সকালে আদিবাসী গাঁওতার তরফে ‘হামলা’র প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে ফরিদপুর ফাঁড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বীরভূমের আদিবাসী নেতা সুনীল সরেনের অভিযোগ, ‘‘এলাকার আদিবাসী যুবকেরা নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ করে রোজগার করেন। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ব্যবসার দখল নিতে হামলা চালিয়েছে।’’ অবিলম্বে ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা না হলে বড় আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘জেলায় বারবার আদিবাসীদের উপরে হামলার ঘটনা ঘটছে। কিন্তু আদিবাসীরা আন্দোলন না করলে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয় না।’’
পুলিশ অবশ্য এই অভিযোগ মানতে চায়নি। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে আশ্বাস পুলিশের কর্তাদের।