বোমাবাজি, ভাঙচুরে তপ্ত শহর

রাতে আবার ডিএসপি টাউনশিপে সিপিএমের প্রধান কার্যালয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সিপিএমের অভিযোগ, মোটরবাইক নিয়ে জনা চল্লিশ দুষ্কৃতী এসে ভাঙচুর শুরু করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৭ ০১:২১
Share:

ফাইল চিত্র।

ভোট এগিয়ে আসার সঙ্গে-সঙ্গেই অশান্তির আঁচ বাড়ছে দুর্গাপুরে।

Advertisement

দলের প্রার্থীর বাড়িতে ফের বোমা ছোড়ার অভিযোগে সিপিএমের রাস্তা অবরোধ, তাকে কেন্দ্র করে গোলমাল বাধল সকালে। রাতে আবার শহরের দুই এলাকায় ভাঙচুর হল তৃণমূল এবং সিপিএমের দু’টি অফিস। বুধবার রাতে এক তৃণমূল কর্মী ও তাঁর স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপি-র বিরুদ্ধে।

ভোটের দিন প্রার্থী ও ভোটারদের নিরাপত্তা এবং সুষ্ঠু ভোটদানের ব্যবস্থা যাতে পুলিশ-প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন করে, সেই আর্জি জানিয়ে সিপিএমের কয়েকজন প্রার্থীর হয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেছিলেন দুই আইনজীবী। এ দিন তার শুনানির পরে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী পুলিশ-প্রশাসনকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ভোটের দিন পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হবে বলেও জানিয়েছে হাইকোর্ট।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিউ টাউনশিপ থানার এমএএমসি এলাকায় ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কর্মী কানাই চক্রবর্তীর বাড়িতে বুধবার গভীর রাতে একটি বোমা ছুড়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। তার আগে তার পাশে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী ধনঞ্জয় ভট্টাচার্যের বাড়ির সামনে গুলি ও বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠেছিল। ওই রাতে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সুমিত রায়চৌধুরীর বাড়ি লক্ষ করে বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। সিপিএমের আরও অভিযোগ, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ডিওয়াইএফ নেতা সিদ্ধার্থ বসুর বাড়িতে গভীর রাতে পুলিশের নাম করে কয়েকজন গিয়ে ভোটের কাজকর্ম থেকে দূরে থাকতে বলে।

এ সবের প্রতিবাদে এ দিন ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বি-ওয়ান মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে সিপিএম। কিছুক্ষণ পরে ট্যাবলো নিয়ে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা সেখানে প্রচারে এলে বচসা শুরু হয়ে যায়। অভিয়োগ, তৃণমূলের লোকজন সিপিএম কর্মীদের সরাতে গেলে দু’পক্ষের হাতাহাতি বেধে যায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

রাতে আবার ডিএসপি টাউনশিপে সিপিএমের প্রধান কার্যালয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সিপিএমের অভিযোগ, মোটরবাইক নিয়ে জনা চল্লিশ দুষ্কৃতী এসে ভাঙচুর শুরু করে। দু’জন কর্মী বাধা দিতে গেলে মারধর করা হয়। পুলিশ আসার আগেই দুষ্কৃতীরা পালায়। তৃণমূল যদিও অভিযোগ মানেনি।

বিধাননগরে রাত ৮টা নাগাদ দু’টি গাড়িতে চড়ে জনা কুড়ি লোক এসে সিআইএফ ব্যারাকের উল্টো দিকে তৃণমূলের অফিসে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। অফিসটি ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী দীপঙ্কর লাহার। তৃণমূলের এক সূত্রের দাবি, দলেরই একাংশ এর সঙ্গে জড়িত। তৃণমূল নেতৃত্ব যদিও তা মানতে চাননি।

সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকারের বক্তব্য, ‘‘জনগণের টাকা নষ্ট করে এমন ভোটে কার লাভ? বাইরে থেকে আসা দুষ্কৃতীরা ভোটের দিন ছাড় পাবে না।’’ তৃণমূলের দুর্গাপুর জেলা সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘ভোট যত এগিয়ে আসছে তত মিথ্যে অভিযোগের সংখ্যা বাড়াচ্ছে সিপিএম। ভোটে শোচনীয় ফলের আগাম অজুহাত খাড়া করে রাখছে ওরা।’’

বুধবার রাতে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের গণতন্ত্র কলোনিতে তৃণমূল কর্মী অরুণ বাদ্যকরের বাড়িতে ঢুকে তাঁকে বিজেপি-তে যোগ দিতে হবে দাবি করে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে বাঁচাতে গেলে স্ত্রী-ও প্রহৃত হন। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে এ দিন তাঁদের দেখতে যান তৃণমূল নেতা উত্তমবাবু ও ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী লাভলি রায়। তখন আবার তৃণমূল এবং বিজেপি-র কর্মীরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। পুলিশ তাদের হটিয়ে দেয়। বিজেপি নেতারা অবশ্য তৃণমূল কর্মীকে মারধরের কথা অস্বীকার করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement