কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
এগজ়িকিউটিভ কাউন্সিলের (ইসি) সভা ডাকাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) বিরোধিতায় বৃহস্পতিবার তেতে উঠল কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। সভা বাতিলের দাবি জানিয়ে উপাচার্যের চেম্বারে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সন্ধ্যা পর্যন্ত তালাবন্দি থাকতে হয়েছে বলে জানান উপাচার্য। পরে তালা খুলে দেওয়া হলেও, রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ চলেছে। এ দিনই দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন আধিকারিক মহেশ্বর মালোদাসকে নিয়ম বহির্ভূত কাজ করার অভিযোগে সাসপেন্ড করেন উপাচার্য। তবে এই নির্দেশের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মহেশ্বর।
কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টে নাগাদ এগজ়িকিউটিভ কাউন্সিলের সভা ডাকা হয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবারই রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে এই বৈঠক নিয়ম বহির্ভূত বলে জানিয়ে দেয়। দফতরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অতিরিক্ত সচিব ওই চিঠিতে উল্লেখ করেন, কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও স্থায়ী উপাচার্য নেই। ফলে, উচ্চ শিক্ষা দফতরের অনুমতি না নিয়ে এগজ়িকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠক ডাকা নিয়ম বহির্ভূত।
এই সভা অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কয়েকশো সদস্য বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে অবস্থান-বিক্ষোভে বসেন। এক সময়ে উপাচার্যের চেম্বারে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অভিনব মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘রাজ্যপালের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরকে অমান্য করে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে বৈঠক ডেকেছেন। তাই এর বিরোধিতা করছি।’’ যদিও ছাত্র বিক্ষোভ, তালা ঝোলানো ও এগজ়িকিউটিভ কাউন্সিলের সভাকে কেন্দ্র করে ওঠা বিতর্কের বিষয়ে উপাচার্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় সন্ধ্যায় ফোনে বলেন, ‘‘আচার্যের নির্দেশে ইসি বৈঠক করা হয়েছে। বহিরাগত কিছু লোকজন এসে বৈঠক বাতিলের দাবি তুলেছেন। বোঝাতে চাইলেও তাঁরা বোঝেননি। তবে আমরা বৈঠক করেছি। আমাকে তালা দিয়ে রাখা হয়েছে।’’
এ দিনই আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ অফিসার মহেশ্বর মালোদাসকে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে কাজ করার অভিযোগে সাসপেন্ড করেছেন উপাচার্য। সাসপেন্ডের চিঠি পাওয়ার পরেই ক্ষিপ্ত হন ওই আধিকারিক। তাঁর দাবি, ‘‘সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু আর্থিক অনিয়ম হয়েছে। অন্যায় কাজকর্ম হচ্ছে। আমি সেগুলির নিয়মিত প্রতিবাদ করি। আচার্যকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। সেই রাগ থেকে আমাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’’ এই নির্দেশের বিরুদ্ধে তিনি আদালতে যাবেন বলেও দাবি করেন। উপাচার্যের অবশ্য দাবি, ওই আধিকারিকের অভিযোগের কোনও সত্যতা নেই।