দুর্গাপুর গভর্নমেন্ট কলেজে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা। মঙ্গলবার। ছবি: বিকাশ মশান
অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে তপ্ত হল দুর্গাপুর গভর্নমেন্ট কলেজ। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) এবং এবিভিপি-র কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে গোলমাল বেধে যায় মঙ্গলবার। পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। যদিও পুলিশ তা মানতে চায়নি।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, এ দিন এবিভিপি-র তরফে বিভিন্ন দাবিতে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচির কথা জানানো হয়েছিল। কলেজে ভর্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক অনলাইন ব্যবস্থা চালু, ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ছাত্র ইউনিয়নের কার্যালয় বন্ধ রাখা, ছাত্র সংসদ নির্বাচনে লিংডো কমিটির সুপারিশ মেনে অনলাইন মনোনয়ন জমার পদ্ধতি চালু, কলেজ উন্নয়নের আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ-সহ নানা দাবিতে স্মারকলিপি, জানায় এবিভিপি।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সকাল থেকে কলেজের গেটে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ফুলঝোড় মোড় থেকে মিছিল করে এবিভিপি কর্মী-সমর্থকেরা কলেজে আসেন। পুলিশ গেটে মিছিল আটকে দেয়। স্মারকলিপি দিতে প্রতিনিধি হিসেবে চার জন ভিতরে যান। কিন্তু টিএমসিপি সমর্থকেরা দাবি করেন, কলেজে বহিরাগতদের স্মারকলিপি জমা দিতে দেওয়া হবে না। স্মারকলিপি দেওয়ার নাম করে তাদের সমর্থক কয়েকজন ছাত্রীকে বহিরাগতেরা হেনস্থা করেছে বলেও অভিযোগ তোলে টিএমসিপি। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বেধে যায়। পুলিশ তা নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশি পাহারায় এবিভিপি-র তরফে চার জন অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি দেন।
খবর পেয়ে কলেজের সামনে পৌঁছে যান তৃণমূল নেতা উত্তম মুখোপাধ্যায়, পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দেবব্রত সাঁই, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দীপঙ্কর লাহা। তাঁদের অভিযোগ, এবিভিপি সমর্থক পড়ুয়াদের সঙ্গে দুষ্কৃতীরা কলেজে ঢুকে আইন-শৃঙ্খলা নষ্ট করেছে, টিএমসিপি সমর্থক কয়েকজন ছাত্রীকে হেনস্থা করেছে। অথচ, পুলিশ টিএমসিপি সমর্থকদের উপরেই লাঠি চালিয়েছে, অভিযোগ তাঁদের। পুলিশ অবশ্য লাঠি চালানোর কথা মানেনি।
দেবব্রতবাবুর অভিযোগ, ‘‘এবিভিপি-র ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে হাফ প্যান্ট পরা দুষ্কৃতীরা ছিল। পুলিশের ঘেরাটোপে বহিরাগতেরা স্মারকলিপি দিয়েছে, অধ্যক্ষ তা গ্রহণ করেছেন।’’ টিএমসিপি-র তরফে অধ্যক্ষকে ঘেরাও করা হয়। এবিভিপি-র তরফে ধৃতি চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘এই কলেজে টিএমসিপি টানা অনৈতিক কাজকর্ম করে চলেছে। আমাদের আন্দোলনে বিব্রত হয়ে তৃণমূল নেতারা গণ্ডগোল পাকাতে চলে আসেন।’’
অধ্যক্ষ পুরুষোত্তম প্রামাণিক বলেন, ‘‘চার জন স্মারকলিপি দিতে আসবে বলে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সেইমতোই স্মারকলিপি জমা পড়েছে। যে কোনও ছাত্র সংগঠন স্মারকলিপি দিতে পারে। তবে যদি বাইরের কেউ তখন কলেজে ঢুকে বিশৃঙ্খলা করে থাকে, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’ এগজিকিউটিভ কমিটির বৈঠক ডেকে ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে, জানান তিনি।