চন্দ্রকোনা রোডে আলুবীজ বাজারে পরিদর্শন। নিজস্ব চিত্র
খোলা বাজারে আলুর কিলোগ্রাম প্রতি দাম ৩০ পেরিয়ে ৪০ টাকার ঘরে ঢুকে গিয়েছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আলুবীজের দামও। গতবছর এইসময় চন্দ্রকোনা রোডের বাজারে আলুবীজের ৫০ কিলোগ্রামের প্যাকেট বিক্রি হয়েছিল দেড় হাজার টাকায়। এবার তারই দাম দ্বিগুণেরও বেশি। আতান্তরে জলদি জাতের আলু চাষ করা চাষিরা। এত টাকা দাম দিয়ে বীজ কিনে জলদি আলু চাষ করায় আগ্রহ হারাচ্ছেন বহু চাষি। কেন আলুবীজের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেল তা খতিয়ে দেখতে টাস্ক ফোর্স গঠন করল জেলা কৃষি দফতর।
কৃষি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কেন দাম বৃদ্ধি তা জানতে বাজারগুলি পরিদর্শন করা হবে।’’ জেলা সহ কৃষি অধিকর্তা (তথ্য) দুলালদাস অধিকারী বলেন, ‘‘আলুবীজের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। তার সদস্যেরা বাজার পরিদর্শন করে খতিয়ে দেখবেন।’’ সোমবার থেকেই শুরু হয়েছে পরিদর্শন। এ দিন সন্ধ্যায় টাস্কফোর্সের সদস্যেরা চন্দ্রকোনা রোডে আলুবীজ বাজার পরিদর্শন করেন।
প্রতি বছর অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে জলদি জাতের আলু চাষ করার প্রস্তুতি শুরু করে দেন চাষিরা। সেই আলু ডিসেম্বর - জানুয়ারিতে বাজারে চলে আসে। শীতের মরসুমে নতুন আলুর দামও বাড়ে। চটজলদি লাভ পেতে ধান কেটে ঘরে তোলার পরই সেই জমিতে আলু লাগিয়ে দেন অনেক চাষি। এইসময় বাজারে চলে আসে আলুবীজ। এবার সেই বীজ কিনতে গিয়েই মাথায় হাত চাষিদের।
রাজ্যের মধ্যে অন্যতম আলুবীজের বাজার চন্দ্রকোনা রোডে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, এ বার আলুবীজের দাম আকাশছোঁয়া। ৫০ কিলোগ্রামের বস্তা পিছু পোখরাজ প্রজাতির আলুবীজের দাম ৩২০০ থেকে ৩৮০০ টাকা। জ্যোতি বীজের দাম ৩৬০০ থেকে ৩৮০০ টাকা। গড়বেতার অমূল্য মণ্ডল, চন্দ্রকোনা রোডের আসগর আলিরা বীজ কিনতে এসে দাম শুনে থ। দু'জনেই বলেন, ‘‘বীজ কিনতেই যদি এত টাকা চলে যায়, তাহলে লাভ থাকবে কোথায়!’’
দাম যে এবার অস্বাভাবিক বেশি, তা স্বীকার করছেন আলুবীজ ব্যবসায়ীরাও। চন্দ্রকোনা রোডে গেটবাজার চত্বরের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘গত সপ্তাহে দাম উঠে গিয়েছিল বস্তাপিছু ৪৫০০-৪৮০০ টাকা, এখন তো একটু কমেছে।’’ আলুবীজ ব্যবসায়ী সমিতির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা গড়বেতা ৩ পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান সভাপতি আকাশদীপ সিংহ বলেন, ‘‘এবারের মতো আলুবীজের দাম আগে কখনও হয়নি। পঞ্জাবে দাম বাড়ার ফলে এই অবস্থা এবার। বীজ নিয়ে কালোবাজারি যাতে না হয় তা দেখা হচ্ছে।’’ আলুবীজ ব্যবসায়ী সমিতির বর্তমান রাজ্য সভাপতি বিশ্বজিৎ সিংহরায় বলেন, ‘‘পঞ্জাবে এবার পোখরাজ আলুর উৎপাদন কম। সেখানেই আলুবীজ কিনতে হচ্ছে বস্তাপিছু ৩২০০ - ৩৫০০ টাকায়। তারপর সেটা আনতে গাড়ি ভাড়া দিতে হচ্ছে বস্তা পিছু প্রায় ৩০০ টাকা করে। এসব মিলিয়ে দাম বেড়েছে, ব্যবসায়ীদেরও কিছু করার নেই।’’
ঊর্ধ্বমুখী দর
সাল পোখরাজ জ্যোতি
• ২০১৮ ১০০০- ১২০০ ৯০০ - ১১০০
• ২০১৯ ১৪০০ - ১৫০০ ১৫০০ - ১৬০০
• ২০২০ ৩২০০ - ৩৮০০ ৩৬০০ - ৩৮০০