অজয় দাস। নিজস্ব চিত্র।
এ বার এক টোটোচালককে তলব করল সিবিআই। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের নৈহাটির বাসিন্দা অজয় দাসকে তলব করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সিবিআইয়ের ডাক পেয়ে রীতিমতো হতবাক অজয়! সারা দিন গ্রামে ঘুরে টোটো চালান তিনি। বছর পাঁচেক আগে স্ত্রী মারা যাওয়ার পর বাবা ও মেয়েকে নিয়ে একচিলতে টিনের চালের বাড়িতে বাস তাঁর। একমাত্র মেয়ে কৃষ্ণা দাস অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে।তবে অজয়ের একটাই নেশা। নিজের এবং গ্রামের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে নেতা-মন্ত্রীদের ফোন করা। সেই তালিকায় পুর ও নগরন্নোয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম থেকে অরূপ বিশ্বাস, স্বপন দেবনাথ এমনকি, বীরভূমের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলও রয়েছেন। এ জন্য গ্রামে তিনি বেশ জনপ্রিয়। তবে সিবিআইয়ের ডাক পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ায় তাঁকে নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে গ্রামে।
আগামী ১৬ জুন অজয়কে দুর্গাপুরের এনআইটি গেস্ট হাউসে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে হাজিরা দিতে হবে। ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় তাঁকে ডাকা হয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। অজয়ের কথায়, ‘‘সিবিআইয়ের ফোন পেয়ে প্রথমে ভেবেছিলাম গ্রামের কেউ মজা করছে। নিজেই জানতে চাই আপনারা কি সত্যি সিবিআই?’’ এর উত্তরে ফোনের অন্য পারে থাকা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘যদি বিশ্বাস না হয় তবে নিজাম প্যালেসে গিয়ে জেনে আসতে পারেন।’’
এর পরেই চিন্তায় পড়ে যান টোটোচালক অজয়। নিজে কোনও সক্রিয় রাজনীতি করেন না, তা সত্ত্বেও কেন তাঁকে ডাকা হল তা কিছুতেই বুঝতে পারছেন না তিনি। তবে তিনি সিবিআইয়ের অস্থায়ী অফিস দুর্গাপুরে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
ছেলের জন্য চিন্তায় রয়েছেন অজয়ের বৃদ্ধ বাবা স্বপন দাস। তিনি বলেন, ‘‘আমার ছেলে রাতদিন টোটো চালায়। তাকে কেন সিবিআই ডাকল বুঝতে পারছি না।’’
কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ শাহনওয়াজ বলেন, ‘‘অজয়কে সিবিআই যখন ডেকেছে সে নিশ্চয়ই যাবে।’’
নেতা-মন্ত্রীদের ফোন করাই কি কাল হল! সিবিআইয়ের ডাক পাওয়ার পর সেই প্রশ্নই এখন মাথার মধ্যে ঘুরছে অজয়ের।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।