অনুব্রত মণ্ডল —ফাইল চিত্র।
গরু পাচার কাণ্ডে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর প্রাক্তন দেহরক্ষী সহগল হোসেনের মামলার শুনানি ছিল আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে। অনুব্রতের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন আদালতে। কিন্তু তিহাড় জেলে বন্দি তৃণমূল নেতা বা তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগই করা গেল না। অনেক চেষ্টা করেও তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনও ভাবেই অনলাইনে সংযোগ করতে পারল না আসানসোল আদালত। তাই বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত এবং তাঁর প্রাক্তন দেহরক্ষী সহগল, কারও জামিনের আবেদন করতে পারলেন না আইনজীবীরা।
অন্য দিকে, এর মধ্যে অনুব্রতের নামে নতুন তথ্য দিয়েছে সিবিআই। তারা আদালতকে জানিয়েছে, বীরভূমে একটি পেট্রল পাম্প অনুব্রতের কন্যা সুকন্যা মণ্ডল এবং তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠ বিদ্যুৎ বরণ গায়েনের নামে রয়েছে। এ ছাড়া খন্দকার কনস্ট্রাকশন নামে একটি কোম্পানিতে প্রচুর নগদ টাকা জমা হয়েছে। তার তথ্য সিবিআই আদালতে জমা দিয়েছে। ওই কোম্পানির মালিক সহগলের শ্যালক বলে জানা গিয়েছে। এর আগে অনুব্রতের নামে চারটি পেট্রল পাম্প থাকার কথা দাবি করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আবার নতুন একটি চালকলের খোঁজ পেয়েছে সিবিআই। এই চালকলের সঙ্গে কেষ্টর চালকলের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল বলে দাবি। আদালতে তারা জানায় পুরনো যে চুক্তিপত্র পাওয়া গিয়েছে, সেগুলি বিভিন্ন ভাবে হাত বদল হয়েছে। সব মিলিয়ে ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ টাকা বাজার মূল্য রয়েছে ওই জমিগুলির। এবং সিবিআই ‘সব থেকে বড় বিষয়’ বলে বিচারককে জানিয়েছে, ওই জমিগুলোর রেজিস্ট্রি হয়েছ নগদ টাকায়। প্রায় এক কোটি টাকারও বেশি নগদ অর্থে জমির রেজিস্ট্রি হল, কিন্তু তা নিয়ে কেন রেজিস্ট্রি অফিস কোনও এই প্রশ্ন তুলল না, তাই দেখে ‘বিস্মিত’ তদন্তকারীরা।
বিচারক এই তথ্যগুলি দেখার পর সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিক সুশান্ত ভট্টাচার্যকে জিজ্ঞেস করেন, এতে দিল্লিতে গিয়ে অনুব্রতকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন আছে কি না। তিনি বলেন, ‘‘আপনারা কি আবেদন করবেন?’’ জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই। আমরা আবেদন করছি। আরও বেশ কিছু তথ্য আমরা পেয়েছি, সেই সমস্ত কিছু নিয়ে আমরা তিহাড় জেলে সহগল হোসেন এবং অনুব্রত মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করব।’’ মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ১০ অগস্ট।