সাঙ্কেতিক চিহ্ন ব্যবহার করে টাকার লেনদেন! গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলক সংস্থা কোলফিল্ডস লিমিটেড (ইসিএল)-এর প্রাক্তন ও বর্তমান মিলিয়ে ধৃত আট কর্তা এবং কর্মীকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত। আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীর দাবি, বিভিন্ন সঙ্কেতের মাধ্যমে কয়লাপাচারের টাকার লেনদেন করতেন তাঁরা। কী ভাবে সেই কারবার চলত, ইতিমধ্যেই সেই সংক্রান্ত কিছু তথ্য তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। ওই তদন্ত সম্পূর্ণ করার জন্য গ্রেফতার হওয়া আট কর্তা ও কর্মীকে জেলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান সিবিআই আইনজীবী।
কয়লাপাচার-কাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে প্রথমে ইসিএলের আট কর্তা-কর্মীকে গ্রেফতার করে সিবিআই। পাঁচ দিনের সিবিআই হেফাজতে ছিলেন তাঁরা। গত শনিবার ইসিএলের আরও এক প্রাক্তন জেনারেল ম্যানেজার গ্রেফতার হন। সোমবার কলকাতার নিজাম প্যালেস থেকে পাঁচটি গাড়িতে করে ওই আট কর্তা-কর্মীকে আসানসোলে নিয়ে আসা হয়। বেলা ১২টা নাগাদ তাঁদের হাজির করানো হয় আদালতে।
সিবিআই আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, ইসিএলের আট কর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১০ কোটি টাকার বিষয়-সম্পত্তির হদিস মিলেছে। শুধু তাই নয়, ইসিএলের ওই কর্তা-কর্মীরা ভাউচারের মাধ্যমে টাকাপয়সা লেনদেনের সময় বিভিন্ন সাঙ্কেতিক চিহ্ন ব্যবহার করতেন। সিবিআইয়ের আরও দাবি, কয়লাপাচার-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালার বাড়িতে তল্লাশির পর যে সব ডায়েরি এবং ভাউচার মিলেছে, তার সঙ্গে ইসিএলের ধৃত কর্তাদের দফতর থেকে উদ্ধার হওয়া ভাউচারের মিল রয়েছে। যদিও এই সাঙ্কেতিক চিহ্ন ব্যবহার করে টাকা লেনদেনের তদন্ত এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। তা সুষ্ঠু ভাবেই সম্পন্ন করতেই ধৃতদের জেল হেফাজতের আবেদন করে সিবিআই।
অন্য দিকে, আদালতে অভিযুক্তদের আইনজীবীর আশিস মুখোপাধ্যায় এবং আশিস কুমারের দাবি, অবৈধ কয়লা খনন আটকানোর জন্য রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরে চিঠি দিয়েছিলেন তাঁদের মক্কেলরা। এ বিষয়ে একটি টাস্ক ফোর্সও গঠন করা হয়েছিল। অবৈধ কয়লা খনন আটকানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ইসিএলের নিরাপত্তা আধিকারিক রাজা পালকে। ওই টাস্ক ফোর্স আদতে কী কাজ করেছিল, তা স্পষ্ট হওয়া জরুরি। সিবিআই নির্দিষ্ট কোনও তথ্য প্রমাণ দিতে পারেনি।
সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আট ইসিএল কর্তা-কর্মীদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী।