বাঁকা নদীতে পড়ে গিয়েছে গাড়ি। নিজস্ব চিত্র
নদীগর্ভ থেকে মেরেকেটে ৩০ ফুট উঁচুতে রয়েছে বাঁশের সেতু। নীচে দিয়ে বয়ে চলেছে বাঁকা নদী। ওই সেতু দিয়েই চালক ও এক মহিলা-সহ তিনজন গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন। আচমকা বিপত্তি। গাড়ি পড়ল সোজা নদীতে। কোনওরকমে রক্ষা পেলেন যাত্রীরা। পূর্বস্থলীর আকবপুর ও কালনা ১-এর নান্দাই পঞ্চায়েতের খরিনান এলাকার মধ্যে যাতায়াতের জন্য থাকা ওই সেতুতে বুধবার এমন বিপত্তি ঘটে। সেতুর পরিকাঠামো নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ আকবপুর থেকে গাড়িটি রওনা হয়েছিল। সাধারণ ভাবে মোটরবাইক, সাইকেল নিয়ে ওই সেতুতে চলাচল হলেও চালক গাড়িটি ওই সেতু দিয়েই নিয়ে যান। সেতুর মাঝামাঝি যেতেই বিপত্তি ঘটে। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে সেতু। গাড়িটি ভাসতে থাকে নদীতে। জল কম থাকায় চালক-সহ দু’জন গাড়ি থেকে বেরিয়ে পাড়ে পৌঁছন। কিন্তু আটকে পড়েন গাড়িতে থাকা এক মহিলা। শেষমেশ এলাকাবাসীর একাংশ গাড়ির জানালার কাচ ভেঙে ওই মহিলাকে উদ্ধার করেন। এর ফলে, ওই মহিলা হাতে চোটও পান। গাড়িটিকে ট্রাক্টরের সাহায্যে টেনে পাড়ে তোলা হয়।
এই সেতুটির পাশাপাশি, অদূরের অন্য একটি বাঁশের সেতুর হাল নিয়েও আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। ওই সেতুটির চলতি নাম, ‘কেউটে সেতু’। বর্তমানে সেটিও জীর্ণ বলে অভিযোগ। অথচ, কাদিপুর, সিমলা গ্রামের প্রচুর ছাত্রছাত্রী ওই সেতুটি ব্যবহার করে। স্থানীয় বাসিন্দা মুজিবর শেখের আশঙ্কা, ‘‘যে কোনও মুহূর্তে বড় বিপত্তি ঘটতে পারে। প্রশাসন দু’টি সেতুর দিকেই নজর দিক। কেউটে সেতুটি কংক্রিটের তৈরি করলে সবথেকে ভাল হয়।’’
কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতি অবশ্য জানিয়েছে, এ দিন যে সেতুতে দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটিতে একসময়ে ইজারা দেওয়া হলেও অদূরে একটি কংক্রিটের সেতু তৈরি হওয়ায় বছর চারেক ধরে আর সেই ব্যবস্থা নেই। মহকুমাশাসক (কালনা) নীতেশ ঢালির দাবি, ‘‘এ দিন যে বাঁশের সেতুতে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেটির প্রশাসনিক বৈধতা নেই। গাড়ির ভার সহ্য করতে না পেরেই সম্ভবত দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে পদক্ষেপ করা হবে। পঞ্চায়েত ওই এলাকায় কংক্রিটের সেতুর প্রয়োজনীয়তার কথা জানালে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’
নান্দাই পঞ্চায়েতের প্রধান ঝুমুর ঘোষ বলেন, ‘‘শক্ত লোহার বিম দিয়ে কেউটে সেতু তৈরির বিষয়ে পঞ্চায়েতে আলোচনা হয়েছে।’’ দুর্ঘটনার কথা শুনে এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘ইসলামপুর থেকে কাদিপুর পর্যন্ত পাকা সেতু রয়েছে। বাঁশের সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন যাতে না চলে, সে জন্য কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতিকে ওই এলাকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার জন্য বলেছি।’’