কলকাতা হাইকোর্টের রায় স্বস্তি খনিকর্মীর স্ত্রীর।
মৃত খনিকর্মীর স্ত্রীকে সুদ-সহ বকেয়া মাসিক ভাতা মেটানোর জন্য ইসিএল-কে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, সংস্থার সোদপুর এরিয়ার ধেমোমেন কোলিয়ারির খনিকর্মী জগদীশ প্রসাদের ১৯৯৭-এর ২১ জুন মৃত্যু হয়। তাঁর স্ত্রী প্রেমলতাদেবী চাকরি অথবা পরিবর্তে সংস্থার বিধি মেনে মাসিক ভাতা দেওয়ার আবেদন জানান। কিন্তু সে সময় জগদীশবাবুর মা ও ভাই ইসিএল-এর কাছে জানান, প্রেমলতাদেবীর সঙ্গে জগদীশবাবুর বিবাহের কথা তাঁদের জানা নেই। তাই জগদীশবাবুর ভাইকে পোষ্য হিসেবে চাকরিতে নিয়োগ করা হোক।
প্রেমলতাদেবীর আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল আসানসোল আদালতে ১৯৯৯-এ এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ২০০৩-এর ৩০ অগস্ট আসানসোল আদালতের নির্দেশে জানানো হয়, প্রেমলতাদেবী জগদীশবাবুর বৈধ স্ত্রী। এর পরে, জগদীশবাবুর মা ও ভাই এই রায়ের বিরুদ্ধে ওই আদালতে আর্জি জানালেও তা খারিজ হয়ে যায়।
এই পরিস্থিতিতে প্রেমলতাদেবী ইসিএল-এর কাছে ফের তাঁর ভাতা অথবা চাকরির আর্জি জানান। কিন্তু ২০১৮-র ১১ সেপ্টেম্বর ইসিএল তাঁকে জানায়, বিষয়টি ‘বিতর্কিত’ ও পুরনো। তাই এই আর্জি মানা সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে প্রেমলতাদেবী ২০১৮-তেই কলকাতা হাইকোর্টে তাঁর আর্জি জানিয়ে মামলা করেন। প্রেমলতাদেবীর আইনজীবী পার্থ ঘোষ জানান, ২০১৯-এর ১৯ মার্চ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি প্রতীকপ্রকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় ইসিএল-কে জগদীশবাবুর মৃত্যুর দিন থেকে তাঁর স্ত্রীর বকেয়া মাসিক ভাতা সুদ-সহ মেটানোর নির্দেশ দেন। তা ছাড়া, প্রেমলতাদেবীর ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত এই ভাতা দেওয়ারও নির্দেশ দেন।
এই রায়ের বিরুদ্ধে ইসিএল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের হলেও বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের রায়ই পুনর্বহাল রাখে ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু এর পরেও ইসিএল রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানায়। পার্থবাবু জানান, কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টও। সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ে তিনি খুশি বলে জানান প্রেমলতাদেবী।
ইসিএল-এর সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, ‘‘আদালতের রায়ের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’