আড়ত থেকে কাকভোরে মাছ কিনে সাইকেলে চেপে এলাকার বাড়ি বাড়ি ঘুরে সে মাছ বিক্রি করত। এর আড়ালেই অস্ত্রের কারবার চালাত পূর্বস্থলী ২ ব্লকের পিলা পঞ্চায়েতের নতুনপল্লির বাসিন্দা ভোলা ভকত। বুধবার রাতে তার বাড়ি থেকে সিআইডি-র পূর্ব বর্ধমান শাখা উদ্ধার করল সাতটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩৭টি গুলি। যার মধ্যে রয়েছে একটি ছ’চেম্বারের রিভলভার ও ৭.৫ এমএম পিস্তল ও পাঁচটি ওয়ান শটার। বৃহস্পতিবার কালনা এসিজেএম আদালতে ভোলার ১৪ দিনের সিআইডি হেফাজত হয়েছে।
মাছ বিক্রেতা ভোলার কাছে এত অস্ত্র মেলায় হতবাক এলাকাবাসী। সিআইডি সূত্রের খবর, মাস আটেক আগে ভাতারের নসিগ্রাম থেকে অস্ত্র কারবারে জড়িত অভিযোগে ধরা হয় মানিক মল্লিক নামে এক জন। জেরায় সা জানায়, একটি আন্তঃরাজ্য অস্ত্র কারবার চক্র ভাগলপুর থেকে অস্ত্র আমদানি করে বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছে। সেখান থেকে অস্ত্র কিনে গোপনে কারবার চালাচ্ছে বহু দুষ্কৃতী।
সম্প্রতি ভোলার অস্ত্র কারবারে জড়িত থাকার কথা জানতে পারেন জেলা সিআইডির আধিকারিকেরা। শুরু হয় নজরদারি। সিআইডি সূত্রের খবর, জেলা সিআইডি ও পূর্বস্থলী থানার পুলিশ মিলিয়ে জনা দশেকের একটি দল বুধবার রাতে ইটের গাঁথনি দেওয়া টালির চালের বাড়ির ভিতরে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করে আগ্নেয়াস্ত্র এবং গুলি। ধরা হয় ভোলাকে।
সিআইডি-র দাবি, ভোলা এই কারবার চালাচ্ছে তিন-চার বছর ধরে। ভোলার সঙ্গে এই অস্ত্র কারবারে জড়িত পূর্বস্থলীর আরও কয়েক জন। তাদের খোঁজ শুরু হয়েছে। জেরার মুখে ভোলা অস্ত্র কারবারের কথা কবুল করলেও কাদের অস্ত্র বিক্রি করত, তা নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি বলে সিআইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে। যদিও সিআইডি কর্তাদের আশা, তাঁদের হেফাজতে আরও কয়েক বার জেরা করলেও ভোলার কাছ থেকে উঠে আসবে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। এসডিপিও (কালনা) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, ‘‘সিআইডি অভিযান চালিয়ে ওকে গ্রেফতার করেছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা সিআইডির সঙ্গে কথা বলব।’’
এ দিন দিন আদালত থেকে বেরিয়ে আসার পরে ভোলাকে কারবার নিয়ে নানা প্রশ্ন করলেও সে কিচ্ছু বলেনি। তার স্ত্রী শিবানী ভকত বলেন, ‘‘ওকে এই কারবার বারণ করেছি। কখনও শুনতো। পরে আবার শুরু করত।’’