এখানেই পুজো করবেন কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র
কারখানার সঙ্গে সম্পর্ক চুকে গিয়েছে বছরখানেক আগে। তবে এখনও তাঁরা নিত্য জড়ো হন কারখানার গেটে। কারণ, প্রভিডেন্ড ফান্ডের টাকা মেলেনি এখনও। বকেয়ার দাবিতে সামিয়ানা বেঁধে অবস্থান-বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানার শ্রমিক-কর্মীরা। সেই সামিয়ানাতেই এ বার বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজনে উদ্যোগী হয়েছেন তাঁরা।
বার্নপুরের এই কারখানা বন্ধের পরে কাজ হারিয়েছেন ২২৬ জন স্থায়ী শ্রমিক। তাঁদের অভিযোগ, ২০১৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সংস্থায় স্বেচ্ছাবসরের বিজ্ঞপ্তি জারি করার সময়ে তিন মাসের মধ্যে প্রভিডেন্ড ফান্ডের টাকা মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনও তা তাঁরা হাতে পাননি। বকেয়া মেটানোর জন্য কর্তৃপক্ষকে বহু আবেদন করেও কাজ হয়নি। শেষমেশ ২৯ জুলাই থেকে কারখানার গেটে মঞ্চ বেঁধে টানা অবস্থান-বিক্ষোভ করছেছেন শ্রমিকেরা।
শ্রমিক সংগঠনগুলির যৌথ উদ্যোগে গড়া কমিটির আহ্বায়ক সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, পিএফ কমিশনারের তরফে কারখানা কর্তৃপক্ষকে ১৩ অগস্টের মধ্যে প্রভিডেন্ড ফান্ডের বকেয়া মেটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার পরে এক মাস কেটে গেলেও তাঁরা টাকা পাননি বলে অভিযোগ। অবস্থানে বসা কর্মী ধনঞ্জয় ভাণ্ডারি বলেন, ‘‘প্রায় ২৮ বছর এখানে চাকরি করেছি। শেষবেলায় বড় অসহায় বোধ করছি। অগস্টে মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিলাম। প্রভিডেন্ড ফান্ডের টাকা পাইনি বলে বিয়ে পিছিয়ে দিতে হয়েছে।’’ সংস্থার প্রভিডেন্ড ফান্ডের ট্রাস্টি সদস্য অমিয় কবিরাজ অবশ্য বলেন, ‘‘চলতি মাসেই বকেয়া মেটানো হবে বলে আশা করছি।’’
তবে না আঁচানো পর্যন্ত ভরসা নেই, বলছেন শ্রমিক-কর্মীরা। কারখানা বন্ধ হয়ে গেলেও বিশ্বকর্মা পুজো বন্ধ করছেন না তাঁরা। সোমবার অবস্থান-মঞ্চে গিয়ে দেখা যায়, সেখানেই পুজোর তোড়জোড় শুরু করেছেন শ্রমিক-কর্মীরা। বিনয় মিশ্র বলেন, ‘‘কারখানার সঙ্গে এখনও দেনা-পাওনার সম্পর্ক রয়েছে। বকেয়া পাওয়ার আশায় এই মঞ্চেই বেদী করে বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন চলছে।’’ পুজোর চাঁদা তোলা থেকে যাবতীয় আয়োজনে হাত লাগিয়েছেন সকলেই। আর এক কর্মী দেবাশিস কর্মকার বলেন, ‘‘এ বছরের গোড়ায় এনসিএলটি জানিয়েছে, বার্ন স্ট্যান্ডার্ড বন্ধের সিদ্ধান্ত অবৈধ। তাই কারখানা ফের চালু করার জন্য প্রার্থনা করব আমরা।’’