পরিচয়: মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নতুন জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি। —নিজস্ব চিত্র।
অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান। আশির দশকে অশোক মিত্র কমিশনের রিপোর্টে প্রথম বার জেলা ভাগের প্রস্তাব উঠেছিল। তার পরে এতগুলো বছরে অনেক জল গড়িয়েছে দামোদরে। শুক্রবার বারবেলায় শেষ পর্যন্ত স্বপ্ন পূরণ হল শিল্পাঞ্চলবাসীর। আসানসোলের পুলিশ লাইন মাঠে এ দিন সেই মুহূর্তের সাক্ষী থাকলেন কয়েক হাজার মানুষ। নতুন জেলা ঘোষণার পরে তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘পয়লা বৈশাখের আগেই নতুন বছর শুরু হয়ে গেল আপনাদের।’’
শহর জুড়ে উৎসব শুরু হয়েছিল তিন দিন আগে থেকেই। শুক্রবার সকাল থেকেই সভাস্থলের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েন অনেকে। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, প্রশাসনিক সভা হলেও লোকজন নিয়ে আসার দায়িত্ব ছিল দলের ব্লক নেতাদের উপরে। ভোর থেকে শহরে পৌঁছতে থাকে বাস, ট্রেকার, গাড়ি। বেশির ভাগ তৃণমূল নেতাই এসেছিলেন ধুতি-পাঞ্জাবি পরে। সভা শুরুর আগে লোকশিল্পীদের অনুষ্ঠান হয়।
নেতাদের ভরসায় না থেকে ভোরেই আসানসোল রওনা হয়েছিলেন সালানপুরের জিতপুর-উত্তরামপুরের বাসিন্দা নিমাই সরকার। তিনি বলেন, ‘‘আর ১২৬ কিলোমিটার পথ উজিয়ে আর বর্ধমানে যেতে হবে না। ১৪ কিলোমিটার দূরে আমাদের জেলা সদর। এমন সুবিধে করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতে এসেছি।’’
সভায় মহিলাদের ভিড় ছিল যথেষ্ট। জনা পঞ্চাশ মহিলা হাতে শাঁখ নিয়ে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁরা সকলেই আসানসোলের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। মুখ্যমন্ত্রী নতুন জেলার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করার সঙ্গে-সঙ্গেই শাঁখ ও উলুধ্বনি দেন তাঁরা।
সকাল থেকে আকাশআবি কিছুটা মেঘলা থাকায় সভায় মানুষজন খানিকটা স্বস্তি পান। মুখ্যমন্ত্রী সভায় এসে পৌঁছতেই উচ্ছ্বাস-উল্লাস শুরু হয়ে যায়। সভাস্থল সাজানো হয়েছিল নীল-সাদা বেলুনে। নতুন জেলার নাম ঘোষণা হতেই সেই সব বেলুন ও আতসবাজি ফাটানো হয়। প্রায় ঘণ্টাখানেকের অনুষ্ঠান শেষে শুরু হয় মিষ্টিমুখ ও আবির খেলা। এ দিন শিল্পাঞ্চলের বেশ কিছু বিশিষ্টজনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী।