বেহাল: এই ভবনেই ক্লাস চলে ফাইন আর্টসের। নিজস্ব চিত্র
বছর পার, তবু ফাইন আর্টসের ফল বের করতে পারেনি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফলের দাবিতে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক দফতরে স্মারকলিপি দেয় একটি বেসরকারি কলেজের পড়ুয়ারা। পাশাপাশি কলেজ অফ আর্টস অ্যান্ড ডিজাইন (ক্যাড) নামে ওই কলেজের পরিকাঠামো নিয়েও পড়ুয়াদের একাংশ সরব হন। বুধবার দিনভর কলেজের সামনে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। অধ্যক্ষ আবেশবিভোর মিত্রের সঙ্গেও গোলমালে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নিয়ামক রাজীব মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, আজ, শুক্রবার ফাইন আর্টসের স্নাতক স্তরের ফল বের হবে।
ওই কলেজের দাবি, ২০০৪ সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন নিয়ে কৃষ্ণসায়র পার্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট গ্যালারিতে কলেজটি শুরু হয়। তিন বছর পর তা উঠে যায় রাজ কলেজের পাশে একটি ভাড়া বাড়িতে। আরও কিছুটা দূরে আলমগঞ্জের একটি বিয়েবাড়ি ভাড়া নিয়ে চলে ভাস্কর্য শেখানোর পাঠ। ওই বাড়ির একটি তলায় চলে স্নাতকোত্তর শিক্ষা। এ ভাবে কলেজটি চললেও ২০১৫-১৬ সালের পর কোনও বছরেরই ফল প্রকাশ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়। যদিও নতুন ভর্তি চলেছে।
পড়ুয়াদের অভিযোগ, পুজোর মধ্যে ফল বেরনোর কথা, অথচ পরীক্ষার এক বছর হয়ে গেলেও তা বেরোয়নি। তাঁদের ক্ষোভ, “পাশ করলাম কি না জানি না। কিন্তু পরের বর্ষের পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিতে হয়েছে।” বুধবার ফল প্রকাশ ও কলেজের পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে পড়ুয়াদের সঙ্গে ছিলেন অধ্যক্ষও। তিনিও পরীক্ষা নিয়ামক দফতরে গিয়ে ফল প্রকাশের দাবি জানান। পড়ুয়াদের দেওয়া স্মারকলিপিও জমা দেন। কিন্তু পরীক্ষা নিয়ামক দফতর থেকে ফিরে আসার পরেই আন্দোলন তোলার জন্য অধ্যক্ষ কয়েকজন ছাত্রের গায়ে হাত তোলেন বলেও তাঁদের অভিযোগ। বিষয়টি থানা ও কলেজ পরিচালন সমিতিকে জানায় ছাত্রেরা। যদিও অধ্যক্ষের দাবি, “দু’এক জন ছাত্র আমাকে হেনস্থা করেছে। শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীদের আটকে রেখে বাইরে কুরুচিকর পোস্টার লাগিয়েছিল।”
পড়ুয়াদের দাবি, বেসরকারি কলেজে ফি বাবদ প্রতি বছর ৪০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়। অথচ পরিকাঠামোর কোনও উন্নতি নেই। ছবি আঁকার জন্য ডেস্ক, বসার জায়গা, পর্যাপ্ত আলো এমনকী পানীয় জলেরও অভাব রয়েছে। শৌচালয়ও রয়েছে একটি। আর ভাস্কর্য শেখানোর জায়গায় তো বৃষ্টির ছাঁটে সব ভিজে যায়। পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ, “কলেজে শিক্ষার কোনও পরিবেশ নেই। আমরা কলেজে যাই না না কি ওই ভবনে থাকা বিদ্যুৎ দফতরে—সেটাই বুঝতে পারি না।”
পরিকাঠামোর সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন অধ্যক্ষ। তবে পরিচালন সমিতির সম্পাদক মৃদুল সেন সাফ বলেন, “পরিকাঠামোর কোনও সমস্যা নেই। কলেজের ক্ষতির জন্য কেউ কেউ পড়ুয়াদের উস্কে দিচ্ছে।’’ নবাবহাটে কলেজের নিজস্ব ভবন গড়ারও উদ্যোগ হয়েছে বলে তাঁর দাবি।