প্রতীকী ছবি
ভাগীরথীর উপরে সেতুর জমি নিয়ে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের নথিতে ভুল রয়েছে অভিযোগ তুলে মামলা করেছে নদিয়ার এক পরিবার। সম্প্রতি কালনা সিভিল জজ জুনিয়র ডিভিশনের আদালতে তাহেরপুরের কামগাছির বাসিন্দা শোভারানি ঘোষ ওই মামলা করেন। তাঁর দাবি, ওই জমিতে তাঁর ও তাঁর বোনেদের অংশ রয়েছে। কিন্তু নথিতে সে কথা নেই। মামলাটির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জমি হস্তান্তর ও জমির চরিত্র বদলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন ওই ডিভিশনের বিচারক নিরঞ্জন পালধি।
প্রশাসনের একটা অংশের দাবি, জমি কেনার কাজে গতি এসেছিল সম্প্রতি। তার মধ্যেই মামলা হওয়ায় সেতুর কাজ পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কালনার মহকুমাশাসক নীতেশ ঢালি যদিও বলেন, ‘‘মামলার বিষয়টি জানা নেই। কালনা ২ ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের কাছে খোঁজখবর নেওয়া হবে।’’
শোভারানিদেবীর দাবি, আগেও তিনি এবং তাঁর দুই বোন বঞ্চনার অভিযোগ জানিয়ে মহকুমাশাসক-সহ বিভিন্ন প্রশাসনিক আধিকারিককে চিঠি দিয়েছেন। ওই মহিলা জানিয়েছেন, কুলিয়াদহ এবং হাঁসপুকুর মৌজায় তাঁদের পৈতৃক সম্পত্তি রয়েছে। বাবা হারানচন্দ্র ঘোষ মারা যাওয়ার পরে তাঁর সম্পত্তির মালিক হন পাঁচ ছেলে এবং তিন মেয়ে। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে গোপালচন্দ্র ঘোষের মৃত্যুর পরে ওয়ারিশ হিসেবে তাঁর ছেলে সিদ্ধেশ্বর ঘোষ সে অংশের মালিক। শোভারানিদেবীর অভিযোগ, জমির ‘এলআর’ রেকর্ডে ভুল থাকায় তিনি এবং তাঁর দুই বোন শান্তারানি ঘোষ এবং কবিতা ঘোষও পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত। তাঁদের আরও দাবি, বর্তমানে সেতু তৈরির জন্য জমি কেনার কাজ চলছে। চেষ্টা চলছে তাঁদের বঞ্চিত করে বেআইনি ভাবে পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করার। সেতু তৈরির জন্য প্রশাসনকে জমি দিতে তাঁদের আপত্তি নেই বলেও অভিযোগে জানিয়েছেন তাঁরা। অভিযোগপত্রের সঙ্গে মৃত হারানচন্দ্র ঘোষের সন্তানদের নামের তালিকা ও পূর্বসাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের শংসাপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। কালনা আদালতের আইনজীবী গৌতম গোস্বামী এবং পিনাকি রায়ের দাবি, প্রশাসনের সহযোগিতা না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন শোভারানি দেবী। বিপক্ষের আইনজীবী মলয় পাঁজা জানিয়েছেন, পরিবারটির ছেলে মেয়েদের মধ্যে সম্পত্তি দু’দশক আগেই ভাগ হয়েছে। এমনকি, মেয়েদের তরফে নিজেদের ভাগের সম্পত্তি বিক্রিও করে দেওয়া হয়েছে। এই তথ্য আদালতকে জানানো হবে বলেও তাঁর দাবি।